অনেকেরই শৈশব থেকে বেড়ে ওঠার সময়টুকুর স্মৃতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে নিউ ইয়র্ক সিটির সাবওয়ে। প্রতিষ্ঠার পর ১২০ বছরে মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপনের মধ্যেই এই সাবওয়ে ঘিরে গড়ে উঠেছে একদমই ভিন্নধর্মী একটি সংস্কৃতি।
নিউ ইয়র্ক সিটিতে যারা তাদের জীবনের অনেকটা সময় পার করছেন তাদের কাছে সাবওয়েতে ভ্রমণ ও সেখানকার দেয়ালে থাকা চিত্রকর্ম দেখাও যেন অন্যরকম এক আনন্দের ব্যাপার।
শহরে মাটির সবচেয়ে গভীরে থাকা সাবওয়ে স্টেশনটি মূল সড়কেরও ১৭৩ ফুট গভীরে অবস্থিত। সেইন্ট নিকোলাস অ্যাভিনিউ থেকে চমৎকার এই স্থানটিতে এলিভেটরে করে বা এক হাজার ফুট দৈর্ঘ্যের গ্রাফিতি আঁকা টানেলের মাধ্যমেই যাওয়া সম্ভব।
৭০ এর দশকে আজকের মতো এতটা উন্নত ছিল না সাবওয়ের ট্রেনগুলো। অযত্নের কারণে অপরিষ্কার হয়ে পড়ছিলো স্টেশনগুলো। সাবওয়ে ব্যবস্থা ও এর সৌন্দর্য টিকিয়ে রাখতে কর্তৃপক্ষকে এর প্রতি আলাদা করে নজর দিতে ও অর্থ খরচ করতে হয়েছে।
অনেকের অনেক সুখস্মৃতির ভিড়েও নিউ ইয়র্ক সিটি সাবওয়েকে ঘিরে সক্রিয় হয়েছিল অপরাধচক্রগুলো। অপরাধের হার বাড়তে থাকলে একসময় সাবওয়েতে যাত্রীর সংখ্যাও কমে যেতে থাকে।
১৯৭৯ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহেই সাবওয়েতে গড়ে আড়াইশো অপরাধের ঘটনা ঘটতে থাকে। এর ফলে বিশ্বের সব গণ পরিবহন ব্যবস্থার মধ্যে অপরাধ সংঘটনের দিক দিয়ে শীর্ষে উঠে আসে নিউ ইয়র্ক সিটি সাবওয়ে।
নেতিবাচকতা থাকলেও সাবওয়ে সংস্কৃতির স্বাতন্ত্র্যের কারণেই এটি অনন্য হয়ে উঠেছে। ১৯৭৩ সালের দিকে ব্রঙ্কসে হিপহপ গানের চল শুরু হয়। পরে এটি সাবওয়ে সংস্কৃতিরও অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠে। একসময় থেকে নিউ ইয়র্কের এক অনন্য পরিচয় হিসেবে সাবওয়েকে দেখানো হয় বিভিন্ন সিনেমা, টিভি শো এবং মিউজিক ভিডিওতে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও দারুণ জনপ্রিয় হয় সাবওয়ে নিয়ে করা বিভিন্ন পোস্ট।