টেক্সাসে মিফেপ্রিস্টোন বাজারজাতে বাধা নেই

টিবিএন ডেস্ক

এপ্রিল ১৩ ২০২৩, ১৭:৪২

টেক্সাসে মিফেপ্রিস্টোন বাজারজাতে বাধা নেই
  • 0

টেক্সাসে গর্ভপাতের ওষুধ মিফেপ্রিস্টোনের সরবরাহ বন্ধে ফেডারেল জাজের আদেশ আটকে গেছে ফেডারেল অ্যাপিল কোর্টে।

জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের জরুরি অ্যাপিলের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার এই রায় দেয় নিউ অরলিন্সের ফিফথ ইউএস সার্কিট কোর্ট অফ অ্যাপিলের তিন সদস্যের বিচারক প্যানেল। 

রায়ে বলা হয়, টেক্সাসে মিফেপ্রিস্টোন বাজারজাত করতে পারবে ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন- এফডিএ। তবে গর্ভাবস্থায় এটি সেবনের সময়কাল সীমিত করা হয়েছে। সেইসঙ্গে ডাকযোগে ওষুধটির বিতরণ বন্ধে টেক্সাস জাজের আদেশ বহাল রাখা হয়েছে।

অ্যামেরিকায় গর্ভপাতের জন্য প্রচলিত দুটি ওষুধের একটি এই মিফেপ্রিস্টোন। দুই যুগেরও বেশি সময় আগে এই ওষুধের অনুমোদন দেয় এফডিএ। মিসোপ্রস্টাল নামের আরেক ওষুধের সঙ্গে এটি সেবন করলে ১০ সপ্তাহ পর্যন্ত গর্ভাবস্থাতেও গর্ভপাত করা সম্ভব। 

মিফেপ্রিস্টোনের অনুমোদন বাতিলের জন্য গত নভেম্বরে টেক্সাসের একদল চিকিৎসক ও মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েট মামলা করেন। ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের জাজ ক্যাক্সম্যারিককে এ মামলার বিচারকের দায়িত্ব দেয়া হয়।

ক্যাক্সম্যারিক গেল শুক্রবার মামলার রায়ে বলেন, মিফেপ্রিস্টোন বিক্রিতে এফডিএর দুই দশক পুরোনো অনুমোদন ফেডারেল আইনের লঙ্ঘন। এছাড়া সংস্থাটির নেয়া পরের পদক্ষেপগুলোও বেআইনি। 
 


তবে একই সঙ্গে বিচারক বাইডেন প্রশাসনকে অ্যাপিল করার সুযোগ দিতে সাত দিনের জন্য আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত রাখেন। এরপরই অ্যাপিল করে জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট। 

ইউএস সার্কিট কোর্ট অফ অ্যাপিল বুধবার মধ্যরাতের ঠিক আগে রায় ঘোষণা করে। তাতে জানায়, ২০০০ সালে এফডিএ মিফেপ্রিস্টোনের যে প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছিল সেটি অব্যাহত থাকতে পারে।

তবে ২০১৬ সালে ওষুধটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থার সীমা যেভাবে বাড়ানো হয়েছিল সেটি আটকে দিয়েছে আদালত। ওই বছরে গর্ভাবস্থার সাত সপ্তাহ থেকে বাড়িয়ে ১০ সপ্তাহ পর্যন্ত মিফেপ্রিস্টোন ব্যবহারের অনুমোদন দেয়া হয় এবং এ জন্য চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।   

তিন বিচারকের প্যানেল ২-১ ভোটে ওষুধ গ্রহণের ক্ষেত্রে সময়সীমা বাড়ানোর বিষয়টি আটকে দেয়।

 

 

যে দুই বিচারক বিধিনিষেধ কঠোর করার পক্ষে ভোট দিয়েছেন তারা হলেন কার্ট এঙ্গেলহার্ড এবং অ্যান্ড্রু ওল্ডহ্যাম। তারা দুজনেই সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে নিয়োগ পেয়েছেন। 

তৃতীয় বিচারক ক্যাথরিনা হেইনসের নিয়োগ হয় সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের সময়ে। তিনি এ মামলায় বিচারিক আদালতের রায়কে আপাতত সম্পূর্ণভাবে স্থগিত করার পক্ষে মত দেন। 
 


মিফেপ্রিস্টোনকে বাজার থেকে পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নিলে জনস্বাস্থ্যের ওপর গুরুতর প্রভাব পড়ার আশংকা করছে বাইডেন প্রশাসন। বিষয়টি আপিল কোর্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারক মেনে নিয়েছেন। তবে তারা ২০১৬ সাল থেকে এর ব্যাপক ব্যবহারের অনুমতি দেয়ার বিষয়টির সমালোচনা করেন।

এখন ক্যাক্সম্যারিকের আদেশ পুরোপুরি বাতিল করতে মামলাটি সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারে বাইডেন প্রশাসন।

ক্যাক্সম্যারিকের আদেশের কঠোর নিন্দা জানিয়ে সে রাতেই বিবৃতি দেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেন, ‘আদালত এ মামলায় ওষুধ অনুমোদনকারী বিশেষজ্ঞ সংস্থা এফডিএর উপর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছে। এটি কার্যকর হলে এফডিএর অনুমোদনের আর কোনো মূল্য থাকবে না। এমনকি ওষুধ বাজারজাতের প্রক্রিয়াটিকে রাজনৈতিক এবং নৈতিক আক্রমণ থেকে নিরাপদে রাখার চেষ্টাও ব্যর্থ হয়ে যাবে।‘ 

বাইডেন বলেন, ‘এ মামলা এবং আদেশটি নারীদের মৌলিক স্বাধীনতা কেড়ে নিচ্ছে। আমাদের নারীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলার জন্যই এমন নজিরহীন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।‘ 

অ্যাবরশনকে পুরোপুরি নিষিদ্ধ করে গত বছর একটি আইন প্রণয়ন করে আইডাহো প্রশাসন, যা এ বছর কার্যকর হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় অন্তত এক ডজন স্টেইটে অ্যাবরশনের উপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। তবে একই সঙ্গে সংবিধান অনুযায়ী গর্ভপাতের অধিকারের দাবিতে দেশব্যাপী আন্দোলন জোরদার হচ্ছে। 


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন