ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতে কী বলতে চান টিউলিপ?

টিবিএন ডেস্ক

জুন ৮ ২০২৫, ১২:৪০

টিউলিপ সিদ্দিক ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। কোলাজ ছবি

টিউলিপ সিদ্দিক ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। কোলাজ ছবি

  • 0

বাংলাদেশের দুর্নীতি অভিযোগে জড়ানো টিউলিপ সিদ্দিক লন্ডনে সফররত নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের মাধ্যমে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ দূর করতে চান। টিউলিপ মনে করছেন, দুদকের অভিযোগগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং এসব বিষয়ে সরাসরি কথা বলে সত্য উদঘাটন করা প্রয়োজন।

যুক্তরাজ্য সরকারের সাবেক মন্ত্রী ও লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে চান নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে। এই লক্ষ্যে তিনি লন্ডন সফররত ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের আবেদন জানিয়েছেন।

ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের বরাত দিয়ে রবিবার এই তথ্য জানিয়েছে গণমাধ্যম।

চিঠিতে টিউলিপ সিদ্দিক বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা অভিযোগগুলোকে তিনি ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন’ মনে করেন। তাঁর মতে, ঢাকার কিছু মহল উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাঁর ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছে, যা তাঁর পার্লামেন্টারি দায়িত্ব পালনে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

চিঠিতে ড. ইউনূসকে উদ্দেশ করে টিউলিপ লেখেন, ‘লন্ডনে আপনার সফরকালে যদি আমাদের সাক্ষাতের সুযোগ হয়, তাহলে ঢাকায় দুর্নীতি দমন কমিশনের সৃষ্ট ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে পারি। আমার খালা ও বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জড়িত কিছু প্রশ্নেরও ব্যাখ্যা দেওয়ার সুযোগ হবে।’

টিউলিপ সিদ্দিক অভিযোগ করেন, তাঁর আইনজীবীরা লন্ডন থেকে দুদকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কোনো জবাব পাননি। উল্টো সংস্থাটি ঢাকার একটি অচেনা ঠিকানায় কাগজপত্র পাঠাচ্ছে। তাঁর ভাষায়, ‘এই কল্পিত তদন্তের প্রতিটি পদক্ষেপ সংবাদমাধ্যমে ফাঁস করা হচ্ছে, অথচ আমার আইনি দলের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা হচ্ছে না।’

টিউলিপের ভাষ্য, ‘আমি লন্ডনে জন্মগ্রহণকারী একজন ব্রিটিশ নাগরিক এবং গত এক দশক ধরে হ্যাম্পস্টেড ও হাইগেটের সংসদ সদস্য। বাংলাদেশের প্রতি আবেগ থাকলেও, আমি সেখানে জন্মাইনি, থাকি না, এমনকি কোনো ব্যবসায়িক স্বার্থও নেই।’

টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশে অবৈধভাবে একটি জমি বরাদ্দ পাওয়ার অভিযোগও অস্বীকার করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আত্মীয় হওয়ার সুবাদে তিনি ও তাঁর মা ৭ হাজার ২০০ বর্গফুটের একটি প্লট পেয়েছেন ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে। তবে তাঁর আইনজীবীরা এসব অভিযোগকে ‘সম্পূর্ণ রাজনৈতিক’ বলে দাবি করেছেন।

ড. ইউনূস বর্তমানে যুক্তরাজ্যে চার দিনের সফরে রয়েছেন। এই সফরে তাঁর রাজা চার্লস এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা রয়েছে। সফরের ফাঁকে টিউলিপ ওই সাক্ষাতের সময় বের করার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, যুক্তরাজ্যের মন্ত্রী পর্যায়ের মানদণ্ড বিষয়ক উপদেষ্টা লরি ম্যাগনেস গত বছর টিউলিপকে নির্দোষ ঘোষণা করলেও তিনি স্বেচ্ছায় মন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘এই বিতর্ক কেয়ার স্টারমারের নতুন সরকারের জন্য বিব্রতকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

ড. ইউনূস এখনো এই সাক্ষাৎ চেয়ে পাঠানো চিঠির জবাব দেননি।