মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাত রীতিমতো যুদ্ধের রূপ নিয়েছে। পাল্টাপাল্টি হামলায় দু’দেশেই প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে। শনিবার মধ্যরাতে ইসরায়েলের চালানো বিমান হামলায় ইরানে অন্তত ৬০ জন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে তেহরান। নিহতদের মধ্যে ২০ জন শিশু রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
এর আগে, শুক্রবার মধ্যরাতে ইরানের ছোঁড়া একাধিক ব্যালিস্টিক মিসাইলে তেল আভিভসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি শহরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ইসরায়েলি জরুরি সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম জানিয়েছে, হামলায় এখন পর্যন্ত ৪ জন নিহত হয়েছেন এবং অন্তত ২০০ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
শুক্রবার রাতে ইসরায়েলের দুটি সামরিক ও বিমানঘাঁটির দিকে একযোগে দেড় শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরান। ইসলামিক রেভলিউশনারী গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) এক বিবৃতিতে জানায়, "ট্রু প্রমিস থ্রি" নামে এই প্রতিশোধমূলক অভিযান শুরু করা হয়েছে।
রয়টার্সের বরাতে জানা যায়, প্রথম দফার আক্রমণের পর আরও একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এতে তেল আভিভের উপকণ্ঠ রামাত গান এলাকায় একাধিক ভবন ধসে পড়ে। স্থানীয় ফায়ার অ্যান্ড রেসকিউ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভবনের নিচে এখনো অনেকে আটকে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শনিবার ভোরে ইসরায়েলের চালানো পাল্টা হামলায় তেহরানের একটি আবাসিক কমপ্লেক্সে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ হয়। ইরানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়, হামলায় অন্তত ৬০ জন নিহত হয়েছেন, যাঁদের মধ্যে রয়েছে ২০ জন শিশু। আহতের সংখ্যা শতাধিক।
হামলায় তেহরানের মেহরাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া রাজধানীর একাধিক আবাসিক এলাকায় বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে বলে জানা গেছে।
উভয় পক্ষই জানিয়ে দিয়েছে, তারা পাল্টা আক্রমণ অব্যাহত রাখবে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ইসরায়েলের নিরাপত্তার প্রশ্নে আমরা কোন আপস করবো না।’
অন্যদিকে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেছেন, ‘যতক্ষণ না ইসরায়েল আগ্রাসন বন্ধ করছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের জবাব চলবে।’
মধ্যপ্রাচ্যে এই নতুন যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা। সাধারণ মানুষের প্রাণহানি ও যুদ্ধের প্রভাব নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরাও।