
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ইলন মাস্কের সম্পর্ক জোড়া লাগার সম্ভাবনা

টিবিএন ডেস্ক
জুন ৮ ২০২৫, ২:৪৭

ছবি: সংগৃহীত
- 0
প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প আর বিলিওনেয়ার ইলন মাস্কের মধ্যে প্রকাশ্যে নোংরা কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি আপতত বন্ধ আছে। উল্টো, দু’জনের কণ্ঠেই এখন নমনীয়তার সুর।
তার মানে কি, বিরোধ মিটিয়ে আবারো একযোগে কাজ করতে যাচ্ছেন ট্রাম্প ও মাস্ক? কেউ কেউ মনে করছেন, ট্রাম্প তার ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ সেনেটে পাশ করানোর আগে রিপাবলিকান শিবিরকে ঘাঁটাতে চান না বলেই নমনীয় আচরণ করছেন।
অন্যদিকে, নিজের একাধিক ব্যবসায়িক স্বার্থ ইলনকে বাধ্য করতে পারে সমঝোতার সুরে কথা বলতে।
প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প এবং তার সাবেক বন্ধু ইলন মাস্কের মন কষাকষি আর কাদা ছোঁড়াছুড়িতে কিছুটা ভাটা পড়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।
সাংবাদিকরা মাস্ক সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি স্বভাবসুলভ আক্রমণাত্মক কিছু না বলে, অনেকটাই এড়িয়ে গেছেন মাস্ককে আক্রমণ করা থেকে।
মাস্কের মঙ্গল কামনা করে তিনি বলেছেন, এই মুহূর্তে তিনি মাস্ককে নিয়ে ভাবছেন না।
ওদিকে, ট্রাম্পকে ব্যক্তিগত পর্যায়ে চূড়ান্ত আক্রমণ করা ইলন মাস্কের কথাতেও এসেছে নমনীয়তা। দেশের স্বার্থে ট্রাম্প আর মাস্ককে সমঝোতায় আসা উচিত - টুইটারের একটি পোস্টে ইলন মন্তব্য করেন, ‘ইউ আর নট রং’।
‘মাস্ক কংগ্রেসের সমালোচনা করেছেন, ট্রাম্পের নয় – এমন একটি পোস্টে মাস্ক মন্তব্য করেন – ‘এক্সাক্টলি’।
এসব কারণে, এখন প্রশ্ন উঠছে, ট্রাম্প আর মাস্ক কি আবার আগের মত বন্ধু হতে যাচ্ছেন?
সিএনএন এর নিয়মিত শো দ্য এক্স ফ্যাক্টর এ ট্রাম্প মাস্কের সাম্প্রতিক দ্বন্দ্বের চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হয়। সেখানে রাজনৈতিক বিশ্লেষক এসই কাপ এই দ্বন্দ্বকে নেহাতই শিশুসুলভ আখ্যা দিয়ে সমালোচনা করেন।
সিরিয়াসএক্সএম এর উপস্থাপক জন ফিউগেলস্যাং মনে করেন, ট্রাম্প-মাস্কের দ্বন্দ্ব দেশবাসীকে বিনোদনের খোরাক দিয়েছে।
ট্রাম্পের অপেক্ষাকৃত নমনীয় আক্রমণের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফিউগেলস্যাং বলেন, বাজেট বিল পাস করাকে এই মুহুর্তে ট্রাম্প বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন বলেই, তিনি এখনই মাস্কের সঙ্গে বিরোধ বাড়াতে চাইছেন না।
অ্যাটলান্টিক কাউন্সিলের ইউরোপ সেন্টারের সিনিয়র ফেলো টাইসন বার্কার কিন্তু ট্রাম্প আর মাস্কের পুনর্মিলনীর সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না।
কারণ হিসেবে তিনি বলছেন, ওই দুইজনের মধ্যে শক্ত স্বার্থের সম্পর্ক আছে। একই সঙ্গে, দুইজনেরই দীর্ঘ ইতিহাস আছে, অযথা নাটক করে মনোযোগ আকর্ষণ করার।
ট্রাম্প আর মাস্কের বিবাদ বিশ্লেষণ করে তিনি বলছেন, মাস্ক যেমন নগ্নভাবে ট্রাম্পকে আক্রমণ করেছেন, ট্রাম্প কিন্তু তার চরিত্রের বাইরে গিয়ে মাস্ককে তুলনমূলক কম আক্রমণ করছেন।
মাস্কের প্রতি ট্রাম্পের এই তুলনামূলক নমনীয়তার পেছনে ট্রাম্পের বিলিওনেয়ার প্রীতিকেই কারণ হিসেবে দেখছেন টাইসন বার্কার।
তার মতে, নিজের মতো ধনীদের সঙ্গে বিরোধ হলে তা মিটিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে থাকেন ট্রাম্প।
বিশ্লেষক বার্কার মনে করেন না, মাস্ক-ট্রাম্প দ্বন্দ্ব, সেনেটে বাজেট বিলের পেছনে রিপাবলিকানদের সমর্থন কমাতে ভূমিকা রাখবে।
এই দ্বন্দ্ব থেকে মাস্কের যে ব্যবসায়িক ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে বিশ্লেষক বার্কারের।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ইথান বিয়ারম্যান মনে করেন, বাইরে থেকে যতটা ভয়াবহই দেখাক না কেন, ট্রাম্প আর মাস্কের সম্পর্ক এত সহজে ভাংবে না।
তিনি মনে করেন, অর্থনৈতিক স্বার্থই ট্রাম্প আর মাস্ককে আবার পাশাপাশি আনতে ভূমিকা রাখবে।