ট্রাম্প-মাস্ক দ্বন্দ্বের গ্যাঁড়াকলে রিপাবলিকানরা

টিবিএন ডেস্ক

জুন ৭ ২০২৫, ১২:৪২

ইলন মাস্ক ও ডনাল্ড ট্রাম্প। ফাইল ছবি

ইলন মাস্ক ও ডনাল্ড ট্রাম্প। ফাইল ছবি

  • 0

বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি ডনাল্ড ট্রাম্প, অপরদিকে বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক। কিছুদিন আগেও ছিলেন কাছের বন্ধু, রাজনৈতিক সহযোগী। এখন দুজনের দ্বন্দ্ব ঘিরে অস্বস্তিতে পুরো রিপাবলিকান পার্টি। কেউ মুখ খুলছেন না, আবার অনেকেই চাইছেন দ্রুত বিরোধ মিটে যাক। কিন্তু বিশ্লেষকদের মতে, এই দ্বন্দ্ব যে কোনো সময় নতুন নাটকীয় মোড় নিতে পারে।

একদিকে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাজনীতিক, অন্যদিকে বিশ্বের শীর্ষ ধনী। একুশ শতকের আলোচিত ‘বন্ধুত্ব’ যখন ভাঙনের পথে, তখন দোটানায় মার্কিন রিপাবলিকান রাজনীতি।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইলন মাস্কের টানাপোড়েনে গ্যাঁড়াকলে পড়েছেন হাউস ও সিনেটের রিপাবলিকান আইনপ্রণেতারা। দুজনই নিজ নিজ মহলে জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী। ফলে কেউই সরাসরি পক্ষ নিতে চাইছেন না।

২০২৪ সালের নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থীর পক্ষে ইলন মাস্কের প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার অনুদান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। ক্ষমতায় গিয়ে ট্রাম্প মাস্ককে কার্যত ছায়া প্রেসিডেন্টের মর্যাদা দেন। হোয়াইট হাউসের নীতিনির্ধারণী সভাগুলোয় তাঁর মতামত গুরুত্ব পেতে থাকে।

কিন্তু ধন ও ক্ষমতার এই বন্ধুত্ব বেশি দিন টেকেনি। অনির্বাচিত একজন ব্যক্তিকে অতিরিক্ত প্রভাব দেওয়ার প্রশ্নে দলে শুরু হয় গুঞ্জন। গণমাধ্যমে ট্রাম্প-মাস্ক সম্পর্কে ভাঙনের খবর ছড়িয়ে পড়ে। এখন তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা শুধু রাজনীতিকদের ভেতর নয়, মিডিয়াতেও দিনভর চর্চিত।

গোটা রিপাবলিকান পার্টি এই দ্বন্দ্বে পড়েছে বিব্রতকর অবস্থায়। স্পিকার মাইক জনসন, কংগ্রেস সদস্য চিপ রয়, মার্জোরি টেইলর গ্রিন প্রমুখ মনে করছেন, এই বিরোধ শিগগিরই মিটে যাবে। তবে তাঁরা কেউই প্রকাশ্যে পক্ষ নিচ্ছেন না।

সিনেটরদের অবস্থাও একই। কেউ সাফ জানিয়ে দিচ্ছেন, ‘এটা দুজনের ব্যক্তিগত বিষয়’। কেউ কেউ আবার দ্বন্দ্ব আরও উসকে দিতে পারেন—এমন আশঙ্কাও ঘুরছে দলের অভ্যন্তরে।

ডেমোক্র্যাটিক নেতারা অবশ্য এ দ্বন্দ্ব নিয়ে প্রকাশ্যেই কটাক্ষ করছেন। তাঁদের ভাষায়, “দুই ক্ষমতালোভী, স্বার্থপর বিলিয়নারের সংঘাত অনিবার্যই ছিল।”

শুক্রবার পুরো দিনজুড়ে অ্যামেরিকান সংবাদমাধ্যমে গুঞ্জন ছিল—দুজনের মধ্যে টেলিফোনে যোগাযোগ হতে পারে। কিন্তু সেই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প নিজেই।

নিউ জার্সির বেডমিনিস্টারে যাওয়ার পথে প্রেসিডেনশিয়াল বিমানে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “ইলনের জন্য শুভকামনা রইল, তবে আপাতত তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের কোনো পরিকল্পনা নেই।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দুই শক্তিধর ব্যক্তির সম্পর্কের বর্তমান সংকট যে কোনো সময় নাটকীয় মোড় নিতে পারে। আবার মিটেও যেতে পারে হঠাৎ করেই। তাঁদের মতে, আগামী নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে দুজনই নিজের হিসাব-নিকাশের খাতা খুলে বসবেন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।