
না জানিয়ে পানি ছাড়ছে ভারত, অভিযোগ আজাদ কাশ্মীরের বাসিন্দার

টিবিএন ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ১ ২০২৫, ১৯:৩০

পাকিস্তানশাসিত আজাদ কাশ্মীরের ঝিলাম নদী। ছবি: রয়টার্স
- 0
চার সন্তানের জনক কৃষক রফিক জানান, পানি ছাড়ার আগে তাদের কোনো ধরনের সতর্কবার্তা দেওয়া হয়নি।
জম্মু-কাশ্মীরে প্রাণঘাতী হামলার জেরে নয়াদিল্লির সঙ্গে ইসলামাবাদের উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তানশাসিত আজাদ কাশ্মীরের ঝিলাম নদীতে ভারত আগে থেকে না জানিয়ে বেশি পানি ছাড়ছে বলে অভিযোগ করেছেন নদী তীরের এক বাসিন্দা।
রয়টার্স জানায়, কাশ্মীরে হামলার জেরে পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করার পর ঝিলাম নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পানি ছাড়ছে ভারত। চুক্তি স্থগিতের ফলে বন্যাসংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ ডেটা পাওয়ার সুযোগও বন্ধ হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে অনিশ্চয়তা ও ঝুঁকি বাড়ছে আজাদ কাশ্মীরের মুজাফফরাবাদের বাসিন্দাদের।
ঝিলাম নদীর তীরের বাসিন্দা ৭২ বছর বয়সী রফিক হুসাইন ও তার ছয় সদস্যের পরিবার দেখছে, পানি বাড়তে বাড়তে তাদের বাড়ির কয়েক মিটার সীমানার মধ্যে চলে এসেছে।
রফিক রয়টার্সকে বলেন, ‘ভারত পানি ছেড়ে দেওয়ার পর নদীর পানি আট থেকে ১০ ফুট বেড়ে যায়। আগাম সতর্কতা ছাড়াই আরও পানি ছাড়া হতে পাারে, এমন খবরে ব্যাপক ভীতি ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।’
চার সন্তানের জনক কৃষক রফিক জানান, পানি ছাড়ার আগে তাদের কোনো ধরনের সতর্কবার্তা দেওয়া হয়নি।
তার ধারণা, নদী তীরবর্তী এক হাজারের বেশি বাড়ির অন্তত ১০ হাজার মানুষ এখন সরাসরি বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছেন।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিরল সহযোগিতার নির্দশন ছিল ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত সিন্ধু পানি চুক্তি, যার অস্তিত্ব এখন হুমকিতে।
ভারত বলছে, পানি ব্যবহারে তাদের সার্বভৌম অধিকার রয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তান আশঙ্কা করছে, যৌথ এ সম্পদকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে ভারত।
এমন পরিস্থিতিতে আজাদ কাশ্মীরের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজা মোহাম্মদ ফারুক হায়দার খান বলেন, ‘ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি থাকলেও সিন্ধু পানি চুক্তি ত্রিপক্ষীয়। এতে বিশ্বব্যাংকও আছে। এ চুক্তির অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ভারত বা পাকিস্তান একতরফাভাবে এ থেকে সরে আসতে পারে না। চুক্তি বাতিল করতে হলে তাদের পারস্পরিকভাবে সম্মত হতে হবে।’
গত ২২ এপ্রিল ভারতশাসিত কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর ভয়াবহ হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই ভারতীয়।
এ ঘটনার পর অঞ্চলটিতে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়।
ভারত এ হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে।
পাকিস্তান এ অভিযোগ জোরালোভাবে অস্বীকার করে ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে।