
দলীয় নিবন্ধন ও প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ ফিরে পাচ্ছে জামায়াত: ইসি

টিবিএন ডেস্ক
জুন ৪ ২০২৫, ১৬:৪৫

প্রতীকী ছবি
- 0
দীর্ঘ আইনগত লড়াই শেষে নির্বাচন কমিশন জামায়াতকে দলীয় নিবন্ধন ও পুরনো প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে। আদালতের নির্দেশনা ও সংশোধিত গঠনতন্ত্রের আলোকে দলটি আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে বলে ইসি আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে ফের দলীয় নিবন্ধন ও প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ ফিরে পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্র জানিয়েছে, আদালতের নির্দেশনার ভিত্তিতে নিবন্ধন পুনর্বহালের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বুধবার বিকেলে এই তথ্য জানান।
তিনি বলেন, 'অতি সত্তর জামাতে ইসলামী তাদের নিবন্ধন ফেরত পাবে। সেই ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করছি।'
বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এক ব্রিফিংয়ে আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, জামায়াতে ইসলামী তাদের প্রতিনিধিদলের মাধ্যমে আমাদের কাছে একটি আবেদন করেছেন যে, তারা চান তাদের দাঁড়িপাল্লা যে দলীয় প্রতীকটি ছিল, সেই প্রতীকটিও যেন অন্তর্ভুক্ত হয়। এটা নিয়ে বিশদ আলোচনা করেছি।
তিনি বলেন, '২০১৩ সালে জামায়াতের দলীয় নিবন্ধনের সঙ্গে প্রতীক ছিল, সেটি বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। ২০০৮ সালের ৫ নভেম্বর জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন প্রজ্ঞাপনে নিবন্ধনের সঙ্গে দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা দেওয়া হয়েছিল একই প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে। এছাড়া গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের সংশ্লিষ্ট ধারাও বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।'
ইসি মো. সানাউল্লাহ আরও বলেন, ২০১৬ সালে আদালতের একটি ফুল কোর্ট সভার সিদ্ধান্তের আলোকে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক বাতিল করা হয়। এটি ছিল প্রশাসনিক পত্র, রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে তদানিন্তন ইসি এটি পেয়েছিল। সেটার আলোকে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল।
সম্প্রতি দলটি গঠনতন্ত্রে কিছু সংশোধনী এনে নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন জানায়, যাতে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল হিসেবে নয় বরং একটি সাংবিধানিক রাজনৈতিক দল হিসেবে কার্যক্রম চালানোর কথা উল্লেখ রয়েছে।
জামায়াতের দীর্ঘদিনের নির্বাচনী প্রতীক ছিল ‘দাঁড়িপাল্লা’। নিবন্ধন বাতিলের পর দলটি সেই প্রতীক হারায়। এবার নিবন্ধন ফিরে পেলে পুরোনো প্রতীক ফিরে পাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে।
ইসি সূত্র বলছে, একাধিক ধাপের যাচাই-বাছাই শেষে কমিশনের সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে জামায়াত আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয়ভাবে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে।
এ নিয়ে ইতিমধ্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো বলছে, জামায়াতের মতো বিতর্কিত দলকে নিবন্ধন দেওয়া হলে গণতন্ত্রের জন্য তা হবে নেতিবাচক বার্তা।
অন্যদিকে, জামায়াত নেতারা বলছেন, এটা তাদের সাংবিধানিক অধিকার এবং তারা আইন মেনে মাঠে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে ইসির একজন কমিশনার বলেছেন, ‘আমরা আইনের বাইরে কিছু করব না। আদালতের রায় এবং রাজনৈতিক দলের গঠনতন্ত্র—দুই দিক বিবেচনায় রেখেই সিদ্ধান্ত হবে।’