কুমিল্লার মুরাদনগরে মা-ছেলেসহ ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা

টিবিএন ডেস্ক

জুলাই ৩ ২০২৫, ৭:৫১

ঘটনাস্থলে এলাকাবাসীর ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঘটনাস্থলে এলাকাবাসীর ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

  • 0

উত্তেজিত জনতা সংঘবদ্ধভাবে লাঠিসোঁটা ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন মারা যান এবং একজন গুরুতর আহত হন।

কুমিল্লার মুরাদনগরে মাদক কারবার ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে একটি বাড়ি ঘেরাও করে তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে এলাকাবাসী। নিহতদের মধ্যে দুজন নারী একজন পুরুষ। এ ঘটনায় একজন গুরুতর আহত হয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার করইবাড়ী গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন করইবাড়ী গ্রামের রুবি আক্তার (৪৫), তার ছেলে রাসেল (২৫) এবং আরেক নারী জোনাকী (৩২)। গুরুতর আহত অবস্থায় রুবির আরেক মেয়ে রোমা আক্তারকে (৩৫) কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নিহত ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক ব্যবসা, ডাকাতি এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। এর জের ধরেই এলাকাবাসী পিটিয়ে ও কুপিয়ে তাদের হত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে পুলিশ।

ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হবে বলেও পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রুবি আক্তার ও তার পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে মাদক কেনাবেচা, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী হামলা, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে মুরাদনগর, নবীনগর ও বাঙ্গরা বাজার থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

তাদের কারণে এলাকায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। বহুবার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। ফলে এলাকাবাসীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছিল।

বৃহস্পতিবার সকালে গ্রামের মানুষ একত্রিত হয়ে তাদের বাড়ি ঘেরাও করে। পরে উত্তেজিত জনতা সংঘবদ্ধভাবে তাঁদের ওপর হামলা চালায় এবং লাঠিসোঁটা ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন মারা যান এবং একজন গুরুতর আহত হন।

খবর পেয়ে বাঙ্গরা বাজার থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ ঘটনার পর থেকে করইবাড়ী গ্রামে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত রাখতে টহল জোরদার করেছে এবং এলাকাবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।