গাজার কেন্দ্রীয় অঞ্চলে খাদ্য সহায়তা সংগ্রহ করতে জড়ো হওয়া সাধারণ মানুষের ওপর ইসরায়েলি ট্যাংকের গোলাবর্ষণে কমপক্ষে ৫১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। সোমবার এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা।
ঘটনাটি ঘটেছে আল-নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের কাছাকাছি এলাকায়, যেখানে শত শত মানুষ খাদ্য ও ত্রাণ সহায়তার আশায় জড়ো হয়েছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কোনো ধরনের সতর্কতা ছাড়াই একাধিক ট্যাংক শেল ছোড়া হয়, এতে মুহূর্তের মধ্যে লাশে পরিণত হন বহু মানুষ।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একে ‘অনাহারে থাকা সাধারণ মানুষের ওপর বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড’ বলে অভিহিত করেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভয়াবহ দৃশ্যপটে পুড়ে যাওয়া মরদেহ ও আহতদের আর্তনাদ চোখে পড়েছে, যেগুলোর সত্যতা নিশ্চিত করেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা ও ত্রাণকর্মীরা।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এ হামলার বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি। তবে তারা পূর্বেও দাবি করে এসেছে, তাদের হামলার লক্ষ্য শুধুমাত্র হামাস যোদ্ধা ও অবকাঠামো।
এদিকে, এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো এটিকে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ হিসেবে উল্লেখ করে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
জাতিসংঘ ও অন্যান্য ত্রাণ সংস্থাগুলোর মতে, অবরুদ্ধ গাজায় মানবিক পরিস্থিতি ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে। খাদ্য, পানি, ওষুধসহ জরুরি প্রয়োজনীয়তার চরম সংকট চলছে। এ পর্যন্ত চলমান যুদ্ধের মধ্যে গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৩৭ হাজারের বেশি মানুষ, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই হত্যাকাণ্ড যুদ্ধবিরতি আলোচনা ও বন্দিমুক্তির সম্ভাবনাকে আরও জটিল করে তুলবে। মানবিক বিপর্যয় মোকাবেলায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।