অ্যাফ্রিকা ও মধ্য এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশে আন্তর্জাতিকভাবে ভারতীয় কয়েকটি কোম্পানি ওষুধ রফতানি করে থাকে। ক্যামেরুনের আনুষ্ঠানিক অভিযোগের ভিত্তিতে ওষুধ রফতানিকারি কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে নয়াদিল্লি।
ভারতের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ভারতী প্রভিন পাওয়ার দেশটির পার্লামেন্টে বলেছেন, রাজ্য ও ফেডারেল ড্রাগ নিয়ন্ত্রকদের অভিযানের পর সেন্ট্রাল ভারতের মধ্য প্রদেশের ইন্দোরের বাইরে পরিচালিত রিম্যান ল্যাবসকে সব ধরনের ওষুধ উৎপাদনে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। তবে তাদের ম্যানুফ্যাকচারিং লাইসেন্স স্থগিত বা নিষিদ্ধ করা হয়েছে কিনা তা স্পষ্ট করেননি পাওয়ার।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) পক্ষ থেকে গত জুনে জানানো হয়, ক্যামেরুনে ন্যাচারকোল্ড ব্র্যান্ড নামে বিক্রি হওয়া কাশি ও ঠান্ডার সিরাপে অত্যন্ত উচ্চ মাত্রায় বিষাক্ত উপাদান রয়েছে।
ডব্লিউএইচও এবং অন্য হেলথ অর্গানাইজেশন পরিচালিত এক পরীক্ষায় দেখা গেছে, ভারতীয় কোম্পানির সরবরাহ করা ওষুধগুলোতে বিষাক্ত পদার্থ রয়েছে, যা শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ায়।
ডব্লিউএইচওর এক গবেষণায় দেখা গেছে, গাম্বিয়ায় রফতানি করা মেইডেন ফার্মাসিউটিক্যালসের তৈরি শিশুদের কফ সিরাপে মারাত্মক টক্সিন ইথিলিন গ্লাইকোল ও ডাই ইথিলিন গ্লাইকোল রয়েছে। এই রাসায়নিক কার-ব্রেক ফ্লুইডে ব্যবহৃত হয়।
এই টক্সিনগুলো প্রোপিলিন গ্লাইকোলের পরিবর্তেও ব্যবহৃত হতে পারে। এই সিরাপ সেবনে মারা যাওয়া শিশুদের বেশিরভাগই পাঁচ বছরের কম বয়সী ছিল।
বিষাক্ত এসব কফ সিরাপের তদন্তে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ইন্দোনেশিয়ায় উৎপাদিত সাতটি ভারতীয় পণ্য ও ১৩টি ওষুধের কারণে এক বছরে ২০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
এসব অভিযোগে ভারতের ৪১ বিলিয়ন ডলারের ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
এর আগে গত বছর গাম্বিয়ায় অন্তত ৭০ জন এবং উজবেকিস্তানে ১৯ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় মেইডেন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, মেরিয়ন বায়োটেক ও কিউপি ফার্মাকেম নামের তিনটি কাশির সিরাপ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স স্থগিত করে ওষুধ রফতানি বন্ধ করে দেয়া হয়।
তবে কোম্পানিগুলো এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।