বিস্ময়ের সঙ্গে সূর্যগ্রহণ উপভোগ করলেন নর্থ অ্যামেরিকানরা
টিবিএন ডেস্ক সূর্যগ্রহণ দেখতে ভিড় করেন হাজারো দর্শনার্থী। ছবি: সংগৃহীত
এপ্রিল ৮ ২০২৪, ২২:১৩
পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের স্থায়িত্ব ছিল ৪ মিনিট ২৮ সেকেন্ড। ছবি: সংগৃহীত
0
মেক্সিকোর সমুদ্র তীর থেকে শুরু করে অ্যামেরিকা-ক্যানাডা সীমান্তের নায়াগ্রা জলপ্রপাত পর্যন্ত নর্থ অ্যামেরিকা জুড়ে সোমবার পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের জন্য আকাশের দিকে চোখ রেখেছিলেন দর্শনার্থীরা। আরকানসাতে সূর্যগ্রহণের সময় বিয়ে করেছেন অনেক দর্শনার্থী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা পরিষ্কার আকাশে সূর্যগ্রহণের বিরল এই দৃশ্য উপভোগ করেন।
২০১৭ সালের পর এই প্রথম নর্থ অ্যামেরিকায় পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখা গেল।
নিউ ইয়র্কের নর্থ হাডসনের একটি ক্যাম্পগ্রাউন্ডে শত শত দর্শনার্থী উত্তেজনায় চিৎকার করে ওঠেন।
তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় এবং কাছের একটি বিল্ডিংয়ের বাইরে আলো জ্বলে উঠলে, অন্ধকারে অনেকে বলে উঠেছেন, ‘ওহ মাই গড!’
নর্থ অ্যামেরিকায় সূর্যগ্রহণ দেখার প্রধান স্থান হলো মেক্সিকোর সমুদ্র সৈকত তীরবর্তী রিসোর্ট মাসাতলান। সেখানে হাজার হাজার দর্শনার্থী ভিড় করে। সোলার সেইফ চশমা সহ ডেক চেয়ারে বসে চাঁদের ছায়ায় সূর্যের হারিয়ে যাওয়ার দৃশ্য উপভোগ করেন।
গ্রহণ যখন পূর্ণরূপে পৌঁছে তখন করতালি এবং শিস বাজাতে থাকেন দর্শনার্থীরা।
বার, স্টেডিয়াম, মেলার মাঠ ও পার্কে সূর্যগ্রহণ উপভোগ করতে নানান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। নায়াগ্রা জলপ্রপাতের পাশে, ঝর্ণাধারার শব্দ শুনতে শুনতে দর্শনার্থীরা সূর্যগ্রহণ দেখেছেন। শত শত প্রত্যক্ষদর্শী সূর্যের মতো দেখতে পোশাক পরেছিল।
মেক্সিকোর প্যাসিফিক উপকূল থেকে টেক্সাস হয়ে অ্যামেরিকার আরও ১৪টি স্টেইটে আড়াই হাজার মাইল বিস্তৃত এই দৃশ্য দেখার আশায় দূর-দূরান্ত থেকে ভ্রমণ করেছেন ভক্তরা। চাঁদের ছায়া মহাদেশীয় নর্থ অ্যামেরিকা থেকে যাওয়ার কথা ছিল নিউ ফাউন্ডল্যান্ডে।
অ্যামেরিকার সব স্থান থেকে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখা না গেলেও প্রায় সব স্থান থেকেই আংশিক সূর্যগ্রহণ দেখা গেছে।
আরকানসার রাসেলভিলে ‘এলোপ অ্যান্ড দ্য এক্লিপস’ নামে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে চাঁদের ছায়ায় গাঁটছড়া বেঁধেছেন প্রায় ৪০০ দম্পতি।
৪৩ বছর বয়সী লর্ডেস কোরো বলেছেন, সূর্যগ্রহণ উপভোগ করতে তিনি গাড়িতে করে ১০ ঘণ্টা ভ্রমণ করে মাসাতলানে পৌঁছেছেন।
সূর্যগ্রহণ দেখতে ভিড় করেন হাজারো দর্শনার্থী। ছবি: সংগৃহীত
তিনি বলেন, ‘আমি শেষ সূর্যগ্রহণ দেখেছিলাম যখন আমার বয়স ৯ বছর। কিছু মেঘ আছে তবে আমরা এখনও সূর্য দেখতে পাচ্ছি।’
অ্যামেরিকার বেশিরভাগ অংশে মেঘলা আকাশ থাকায় প্রত্যক্ষদর্শীদের জন্য তা একটি অতিরিক্ত চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।
লরা এবং ব্রায়ান উজল সোমবার ইন্ডিয়ানা এবং কেনটাকির মধ্যবর্তী ওহাইও নদীর তীরে গ্রহণের অপেক্ষায় ছিলেন। আকাশ মেঘলা থাকবে, এমন পূর্বাভাসের পরে এই দম্পতি টেক্সাসে এটি দেখার প্রাথমিক পরিকল্পনা বাতিল করেন। এরপর তারা কয়েক শ মাইল দূরে শেষ মুহুর্তের ফ্লাইট এবং ভাড়া গাড়ি ঠিক করেন।
৫৬ বছর বয়সী লরা উজল বলেছেন, পাখি ও পোকামাকড় পরিপূর্ণ একটি নদীর তীরে সূর্যগ্রহণের অভিজ্ঞতা পেয়ে তিনি উচ্ছ্বসিত।
৪ মিনিট ২৮ সেকেন্ড পর্যন্ত চলা এবারের সূর্যগ্রহণ ২০১৭ সালের ২ মিনিট ৪২ সেকেন্ডের বেশি সময় ধরে চলা সময়কালকে ছাড়িয়ে গেছে। নাসা জানিয়েছে, সূর্যগ্রহণের স্থায়িত্ব ১০ সেকেন্ড থেকে প্রায় সাড়ে ৭ মিনিট পর্যন্ত হতে পারে।