বাংলাদেশ কোনো বিশেষ দেশের দিকে ঝুঁকছে না: মোমেন

টিবিএন ডেস্ক

জুলাই ৮ ২০২৩, ১৮:৫৪

‘ডিক্যাব টক’ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। ছবি: ইউএনবি

‘ডিক্যাব টক’ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। ছবি: ইউএনবি

  • 0

বাংলাদেশ চায়নার দিকে ঝুঁকছে এমন ধারণা নাকচ করে দিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

তিনি দাবি করেছেন, বাংলাদেশ একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি বজায় রাখছে।

মোমেন বলেন, ‘কেউ কেউ বলে আমরা চায়নার দিকে ঝুঁকে পড়েছি। আপাতদৃষ্টিতে জোর করে বলা হচ্ছে। আমরা একটি ভারসাম্যপূর্ণ এবং স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি বজায় রাখি। আমরা কারও প্রতি ঝুঁকে পড়িনি।’

তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক উক্তি স্মরণ করে বলেন, ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও প্রতি বিদ্বেষ নয়।’

শনিবার ‘ডিক্যাব টক’-এ বক্তৃতার সময় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের লক্ষ্য হচ্ছে উন্নয়ন ও জনকল্যাণ এবং সরকার সেই লক্ষ্যেই মনোযোগ দিচ্ছে।

বাংলাদেশ কখনই তথাকথিত ‘চাইনিজ ঋণের ফাঁদে’ পড়বে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

মোমেন বলেন, ‘এটি একটি ভুল ধারণা। কোনো কোনো পণ্ডিত এ কথা বলেন। অনেকে এটা গ্রহণ করেছে, বিশেষ করে কিছু বিদেশি প্রতিষ্ঠান। কোনো অবস্থাতেই আমরা চাইনিজ ঋণের ফাঁদে' পড়ব না।’

তিনি বলেন, ‘কিছু লোক এই ভুল ধারণা পোষণ করেছে যে শ্রীলঙ্কার পর বাংলাদেশও চাইনিজ ঋণের ফাঁদে পড়বে।

‘আমরা খুব বিচক্ষণ। বৈদেশিক ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে আমরা খুবই সতর্ক থাকি। আমরা অপ্রয়োজনীয় ঋণ নিই না।’

তিনি বলেন, আইএমএফের তথ্য অনুযায়ী, কোনো দেশ যদি তার ঋণের ৫৫ শতাংশের বেশি একটি দেশ থেকে নেয়, তাহলে ‘ঋণের ফাঁদে’ পড়ার ঝুঁকি রয়েছে।

‘আমাদের সামগ্রিক ঋণ জিডিপির মাত্র ১৩. ৭৮ শতাংশ। এর মধ্যে ৬১ শতাংশ নেয়া হয়েছে এডিবি, আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে। একক দেশ হিসেবে জাপান ১৭ শতাংশ, অর্থাৎ সর্বোচ্চ ঋণ প্রদানকারী।’

মোমেন দাবি করেন, চায়না থেকে বাংলাদেশ ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন অ্যামেরিকান ডলার নিয়েছে, যা মোট জিডিপির শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ।

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ককে ‘ইস্পাত-কঠিন’ বলে বর্ণনা করেন তিনি।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের একটি সোনালি অধ্যায়ে আছি। এটি একটি ইস্পাত-কঠিন সম্পর্ক।’

অ্যামেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘অ্যামেরিকা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে চায়।

‘তারা একের পর এক প্রতিনিধি পাঠাচ্ছে। এটা ভালো। সব দেশের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে। তাই জাতিসংঘের যেকোনো নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে আমরা জয়ী হই। সব দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে।’

বাংলাদেশের ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুক সম্পর্কে মোমেন বলেন, বাংলাদেশ ভূ-কৌশলগতভাবে ভালো অবস্থানে রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘চায়না একটি উদীয়মান তারকা এবং বাংলাদেশ চায় ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সবার জন্য উন্মুক্ত, মুক্ত, নিরাপদ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং নিয়মভিত্তিক নৌচলাচল।

‘ভারত ও জাপানের মতো দেশগুলো এটাই দেখতে চায়। আমরা আমাদের নীতিতে অন্তর্ভুক্তি যুক্ত করেছি। কারণ আমরা সব দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে বসবাস করতে চাই।’

মোমেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টেকসই শান্তি নীতির কথা তুলে ধরে বলেন, শান্তি ও স্থিতিশীলতা ছাড়া উন্নয়ন অসম্ভব।

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিক্যাব) ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ডিসিএবি সভাপতি রেজাউল করিম লোটাস ও সাধারণ সম্পাদক এমরুল কায়েশ।


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন




Do you like cookies? 🍪 We use cookies to ensure you get the best experience on our website. Learn more...