
অ্যামেরিকার পণ্যে পাল্টা শুল্কারোপের ঘোষণা চায়নার

টিবিএন ডেস্ক
ফেব্রুয়ারি ৪ ২০২৫, ১৬:৫৮

প্রতীকী ছবি
- 0
প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প শুল্কারোপ করার পর পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে অ্যামেরিকার পণ্য আমদানিতে শুল্কারোপের ঘোষনা চায়না। একই সঙ্গে গুগলসহ অন্যান্য ব্যবসায়ি প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে তদন্তেরও ঘোষণা দিয়েছে দেশটি।
মঙ্গলবার চায়না এই পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে বলে, তারা কয়লা ও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের পাশাপাশি অ্যামেরিকা থেকে আমদানি করা অপরিশোধিত তেল, কৃষি যন্ত্রপাতি ও বড় ইঞ্জিনের গাড়ির ওপর ১০ শতাংশ শুল্কারোপ করবে। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি সোমবার থেকে নতুন এই শুল্কহার কার্যকর হবে।
চায়নার পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের যে পদক্ষেপ প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প নিয়েছেন, তার পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে অ্যামেরিকার একাধিক পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে চায়না। মঙ্গলবার এই ঘোষণা দেয় চায়নার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এই পদক্ষেপটি বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যযুদ্ধের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে, যেখানে দুই দেশ একে অপরকে বাণিজ্যিকভাবে চাপে রাখতে শুল্ককে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। চায়না জানায়, অ্যামেরিকার কয়লা এবং তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস এলএনজি আমদানির ওপর ১৫ শতাংশ শুল্ক বসানো হবে। এ ছাড়া অপরিশোধিত তেল, কৃষি যন্ত্রপাতি, পিকআপ ট্রাক, বড় ইঞ্জিনযুক্ত গাড়ির ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।
এই শুল্কগুলো চায়না বাজারে অ্যামেরিকার পণ্যের দাম বৃদ্ধি করবে, যা দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করবে। চায়নার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা নিজেদের জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে সম্পূর্ণ স্বাধীন। অ্যামেরিকার শুল্কনীতি তাদের জন্য একধরনের চ্যালেঞ্জ এবং এই পরিস্থিতিতে তারা অ্যামেরিকার পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে। চায়না সরকার শুল্ক আরোপের মাধ্যমে নিজেদের বাজারে অ্যামেরিকার পণ্যের প্রবাহ কমাতে এবং বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ন্ত্রণ করতে চায়।
চায়নার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, চায়না কখনোই অ্যামেরিকার কোনো উসকানি সহ্য করবে না। যথারীতি কঠোর পাল্টা ব্যবস্থা নেবে। বিবৃতিতে চায়না দাবি করে, তাদের জাতীয় স্বার্থের সুরক্ষায় এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলেছেন, এই বাণিজ্যযুদ্ধের দীর্ঘস্থায়ী ফলস্বরূপ দুই দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত হতে পারে এবং সেই সঙ্গে অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর বাজারও বিপর্যস্ত হতে পারে। বিশেষ করে, বাণিজ্য শুল্ক বৃদ্ধির কারণে সাপ্লাই চেইনেও ব্যাপক অস্থিরতা তৈরি হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বিশ্বের বৃহত্তম দুটি অর্থনীতি – অ্যামেরিকা ও চায়নার মধ্যে এই বাণিজ্যযুদ্ধ শুধু দুই দেশের সম্পর্ককে প্রভাবিত করছে না, বরং আন্তর্জাতিক বাজারে নতুন অর্থনৈতিক গতিপথ সৃষ্টি করছে, যা সারা বিশ্বে বড় ধরণের নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।