চুক্তির বিস্তারিত এখনও প্রকাশ করা না হলেও অ্যামেরিকান সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাতে জানা গেছে এই তিন ব্যক্তি চুক্তি অনুযায়ী বিচার প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হওয়ার পরিবর্তে নিজেদের দায় স্বীকার করবেন।
নাইন ইলেভেনের ওই সন্ত্রাসী হামলায় নিউ ইয়র্ক ভার্জিনিয়া ও পেনসিলভেনিয়ায় প্রায় তিন হাজার মানুষ নিহত হন। এরপর অ্যামেরিকা ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ ঘোষণা করে ও আফগানিস্তান এবং ইরাকে সামরিক অভিযান শুরু করে।
নাইন ইলেভেন জাস্টিস নামের একটি সংস্থা রয়েছে যেটি ওই হামলায় বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের ও হামলার ভিক্টিমদের পরিবারের প্রতিনিধিত্ব করে। সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট ব্রেট ইগলসন এক বিবৃতিতে বলেছেন, এই দায় স্বীকার চুক্তির খবরে হতাহতদের পরিবারের সদস্যরা মর্মাহত হয়েছেন।
এই ধরণের চুক্তির প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, হামলায় সৌদি আরবের ভূমিকা সম্পর্কে আরও তথ্য পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বাড়তি পদক্ষেপ নেয়া উচিত।
নাইন ইলেভেনের হামলায় নিজের স্বামীকে হারানো টেরি স্ট্রাডা নামের এক নারী বিবিসিকে বলেন, ‘গুয়ানতানামো বে তে থাকা বন্দিদেরকে তারা যা চাচ্ছে তা দিয়ে দেয়ার এই চুক্তির কথা শোনাটা খুবই কষ্টের।’
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন পার্ল হারবারে জাপানের আক্রমণে ২ হাজার ৪০০ মানুষ নিহত হওয়ার পর নাইন ইলেভেনই ছিল অ্যামেরিকার ওপর হওয়া সবচেয়ে মারাত্মক হামলা।
নিউ ইয়র্ক টাইমস তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভিক্টিমদের পরিবারের কাছে প্রসিকিউটরদের পাঠানো এক চিঠিতেই সর্বপ্রথম এই দায়মুক্তি চুক্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
ওই চিঠিতে বলা হয় পরবর্তী সপ্তাহেই একটি সামরিক আদালতে অভিযুক্তরা তাদের দায় স্বীকার করতে পারেন।
এক ঘোষণায় ইউএস ডিফেন্স ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, ‘প্রাক বিচার এই চুক্তির শর্তাবলীর বিস্তারিত এখনই জনসাধারণের জন্য প্রকাশ করা হবে না।’
ওই তিন ব্যক্তিকে বেসামরিক ব্যক্তিদের ওপর হামলা, যুদ্ধ আইন লঙ্ঘন করে হত্যা, ছিনতাই ও সন্ত্রাসসহ বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
এই চুক্তির প্রসঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পিটার বার্জেন সিএনএনকে বলেন, ‘বাস্তব জগতে হওয়া এটাই সবচেয়ে কম খারাপ চুক্তি।’
এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে হামলায় অভিযুক্ত পাঁচ ব্যক্তির ব্যাপারে প্রস্তাবিত একটি দায়মুক্তি চুক্তি প্রত্যাখ্যান করে।