হিন্দুস্থান টাইমস জানিয়েছে, ভারতে সাত ধাপের নির্বাচন চলার মধ্যেই নয়াদিল্লিতে বুধবার ‘সামাজিক ন্যায় সম্মেলন’ নামে এক অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।
রাহুল গান্ধি বলেন, ‘বর্ণ শুমারি আমার জন্য রাজনীতি নয়, এটি আমার জীবনের লক্ষ্য। পৃথিবীর কোন শক্তিই বর্ণ শুমারি বন্ধ করতে পারবে না। কংগ্রেস যখন নির্বাচিত হবে তখন বর্ণ শুমারিই হবে প্রথম কাজ যা আমরা হাতে নেব। এটা আমার গ্যারান্টি।’
তিনি জানান, বর্ণ শুমারি কেবল একটি বর্ণ জরিপ নয়, এতে ‘অর্থনৈতিক’ এবং ‘প্রাতিষ্ঠানিক’ উপাদান থাকবে যা প্রকাশ করবে কোন সম্প্রদায়গুলো উপকৃত হচ্ছে এবং আর্থ-সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কী করা উচিত।
এ সময় রাহুল গান্ধি অভিযোগ করেছেন, নরেন্দ্র মোদির বিজেপি দলিত এবং আদিবাসীদের ইতিহাস ‘মুছে ফেলছে’।
তিনি বলেন, ‘আমি জাতপাতের বিষয়ে আগ্রহী নই; ন্যায়বিচারের বিষয়ে আগ্রহী।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজেকে পিছিয়ে পড়া বর্ণের দাবিকে ইঙ্গিত করে রাহুল গান্ধি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদি গত ১০ বছর ধরে বলছেন যে তিনি পিছিয়ে পড়া বর্ণ থেকে এসেছেন। আমি যখন বর্ণ শুমারির কথা বললাম; মোদি বলেন- কোন জাত নেই। জাত না থাকলে পিছিয়ে পড়া বর্ণ হয় কিভাবে?
‘মোদি বলেছেন যে ভারতে কেবল দুটি বর্ণ রয়েছে, গরীব ও ধনী। তাহলে গরীব এবং ধনীর তালিকা বের করুন। দলিত ও আদিবাসীদের দরিদ্রদের তালিকায় খুঁজে পাবেন। তাদের ধনীদের তালিকায় পাবেন না।’
বর্ণ শুমারিকে ‘জাতীয় এক্স-রে’ বলে অভিহিত করে গান্ধী বলেছেন, ‘একজন দেশভক্ত কী চান? একজন দেশভক্ত দেশে বিচার চান। একজন দেশভক্ত চায় ভারত এগিয়ে যাক এবং পরাশক্তি হয়ে উঠুক।
‘আপনি যদি পরাশক্তি হতে চান এবং চায়নার চেয়ে এগিয়ে যেতে চান তবে জনসংখ্যার ৯০ শতাংশের শক্তি ব্যবহার করতে হবে। যারা নিজেদেরকে দেশভক্ত বলে, তারা কেন এক্স-রেকে ভয় পায়।’
ভারতের আলোচিত রাম মন্দির ও নবনির্বাচিত সংসদ ভবন উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে একজন দলিত কিংবা ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর প্রতিনিধিকে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ করেন রাহুল গান্ধি।
২২শে জানুয়ারি অনুষ্ঠিত রাম মন্দিরের অনুষ্ঠানে ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর থেকে আসা ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে আমন্ত্রণ না করার জন্য তিনি বিজেপিকেও কটাক্ষ করেছেন।
বুধবারের ভাষণে রাহুল গান্ধি নরেন্দ্র মোদির কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে দেয়া সম্পদ পুনঃবন্টন বিতর্কের বিষয়ে আক্রমণ করে বলেছেন, কংগ্রেসের বিপ্লবী ইশতেহার পড়ার পর তারা (বিজেপি) আতঙ্কে রয়েছে।
মঙ্গলবার রাজস্থানে এক নির্বাচনি সমাবেশে কংগ্রেস ক্ষমতায় গেলে ভারতের সকল সম্পদ মুসলিমদের দিয়ে দেয়া হবে- এমন বিতর্কিত বক্তব্য দেন মোদি।
এর প্রতিক্রিয়ায় রাহুল গান্ধি বুধবার বলেন, ‘কংগ্রেসের লক্ষ্য শতকরা ৯০ জনকে সহায়তা দেয়া। বিজেপির ২২ থেকে ২৫ জন বড় ব্যবসায়ীকে ঋণ মওকুফ হিসাবে দেয়া প্রায় ১৯২ বিলিয়ন ডলারের একটি অংশ পুনরুদ্ধার করে ভারতীয়দের শতাংশ হিসেবে দেয়া হবে।’
এ বিষয়ে রাহুল গান্ধি বলেন, ‘আমি বলছি না যে আমরা এখনই ব্যবস্থা নেব। আমি শুধু বলছি, চলুন জেনে নেয়া যাক কতটা অবিচার করা হয়েছে।’