অ্যামেরিকার হামলা কৌশলগত ভুল: ইরান

টিবিএন ডেস্ক

ফেব্রুয়ারি ৪ ২০২৪, ১১:১৫

অ্যামেরিকার হামলায় ইরাকের আল কাইম এ বিধ্বস্ত একটি ভবন। ছবি: সংগৃহীত

অ্যামেরিকার হামলায় ইরাকের আল কাইম এ বিধ্বস্ত একটি ভবন। ছবি: সংগৃহীত

  • 0

ইরাক ও সিরিয়ায় শুক্রবার ৮৫ টি লক্ষ্যবস্তুতে চালানো অ্যামেরিকার বিমান হামলাগুলোকে কৌশলগত ভুল বলে অভিহিত করেছে ইরান।

জর্ডানে অ্যামেরিকার সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় তাদের তিন সেনা সদস্য নিহত হওয়ার কারণে অ্যামেরিকা প্রতিশোধমূলক হামলা শুরু করেছে।

জর্ডানে সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলার জন্য ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে দায়ী করেছে অ্যামেরিকা।

এদিকে অ্যামেরিকা ও ইংল্যান্ড শনিবার ইয়েমেনে হুথিদের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে নতুন করে যৌথ হামলা চালিয়েছে।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইরাক ও সিরিয়ায় অ্যামেরিকার হামলার ফলে এ অঞ্চলে উত্তেজনা ও অস্থিতিশীলতা বৃদ্ধি ছাড়া আর কোনো ফল আসবে না।

এর আগে ইরাক জানিয়েছিল, অ্যামেরিকার প্রতিশোধমূলক হামলা এই অঞ্চলের জন্য ‘বিপর্যয়কর পরিণতি’ নিয়ে আসবে।

ইরাকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অ্যামেরিকার হামলায় সেখানে বেসামরিক নাগরিকসহ অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছেন।

ইরাকের প্রধানমন্ত্রীর একজন মুখপাত্র বলেছেন যে , এই হামলাগুলো তার দেশের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন ও এগুলো ইরাক ও ওই অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোর নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ওপর প্রভাব ফেলবে।

অ্যামেরিকার হামলার প্রেক্ষিতে সিরিয়া জানিয়েছে, সিরিয়ার ভূখণ্ডে অ্যামেরিকার ‘দখলদারিত্ব’ চলতে পারে না।

অ্যামেরিকার একটি সামরিক বিবৃতি অনুযায়ী, ইরাক ও সিরিয়ায় অ্যামেরিকা ইরানের রেভোলিউশনারি গার্ডস কর্পস (আইআরজিসি) এর কুদস ফোর্স ও এর সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীগুলোর ওপর হামলা চালিয়েছে।

এই হামলায় দীর্ঘ পাল্লার বম্বার সহ বেশ কয়েকটি অ্যামেরিকান যুদ্ধ বিমান অংশ নেয়।

অ্যামেরিকান সেনাবাহিনী জানিয়েছে, সিরিয়ায় চারটি ও ইরাকের তিনটি স্থানের ৮৫ টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে।

তবে এখন পর্যন্ত ইরানের ভূখণ্ডে অ্যামেরিকা বা তার মিত্ররা কোনো হামলা চালায়নি।

অ্যামেরিকার একজন সামরিক কর্মকর্তা বিবিসির অ্যামেরিকান অংশীদার সিবিএস নিউজকে জানিয়েছেন, ইরাক ও সিরিয়ায় অ্যামেরিকার শুক্রবারের হামলার পর এখন পর্যন্ত অ্যামেরিকান বাহিনীর ওপর একটি হামলা হয়েছে।

সিরিয়ায় মিশন সাপোর্ট সাইট ইউফ্রেটিস এ অবস্থান করা অ্যামেরিকান সেনা সদস্যদের ওপর রকেটের মাধ্যমে ওই হামলা চালানো হয়। তবে এই হামলায় কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন: হুথিদের ৩০টির বেশি লক্ষ্যবস্তুতে অ্যামেরিকা ও বৃটেইনের হামলা

ইরাক ও সিরিয়ায় অ্যামেরিকার হামলার প্রসঙ্গে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘আমাদের পছন্দ অনুযায়ী সময় ও স্থানে হামলা চলবে।’

তবে তিনি আরও বলেছেন যে, তার দেশ মধ্যপ্রাচ্য বা পৃথিবীর কোনো স্থানেই সংঘাত চায় না।

জাতিসংঘে মস্কোর কূটনীতিক দিমিত্রি পোলিয়ানস্কি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছেন, ইরাক ও সিরিয়ায় অ্যামেরিকার হামলার কারণে ওই অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তার ঝুঁকির কথা উল্লেখ করে ইউএন সিকিউরিটি কাউন্সিলে জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছে রাশিয়া।

সিকিউরিটি কাউন্সিলের সদস্য রাশিয়া ইরানের ঘনিষ্ঠ মিত্র।

অ্যামেরিকার সাম্প্রতিক হামলার সময় নিয়ে নিন্দা জানিয়েছেন অ্যামেরিকার রিপাবলিকান পার্টির সদস্যরা। অ্যামেরিকা হামলা চালাতে দেরি করে ফেলেছে বলে তারা মত প্রকাশ করেছেন।

এর প্রেক্ষিতে অ্যামেরিকার সামরিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আকাশ মেঘলা থাকার কারণে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে সমস্যা হওয়ায় তারা ওই সময় বেছে নিয়েছেন।

কিছু বৈদেশিক নীতি বিশেষজ্ঞ ধারণা করছেন, অ্যামেরিকা হামলা করতে দেরি করার কারণে ওই অঞ্চল থেকে ইরান তাদের সেনা সদস্যদের সরিয়ে নেয়ার সুযোগ পেয়েছে। ফলে সেখানে অ্যামেরিকা ও ইরানের মধ্যে একটি বড় পরিসরের সংঘাত এড়ানো গেছে।


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন