অ্যামেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এবার তার ফ্লোরিডার এস্টেটের সিসিটিভি ফুটেজ মুছে ফেলার জন্য এক কর্মীকে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে। গোপন নথির মামলায় এ ঘটনায় নতুন অভিযোগ যুক্ত করেছেন স্পেশাল কাউন্সেল জ্যাক স্মিথ।
এর আগে গোপন নথির অব্যবস্থাপনার মামলায় তাকে ৩৭ কাউন্টে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। এখন আরও তিন অভিযোগ এতে যুক্ত করা হয়েছে। সেগুলো হলো, ইচ্ছাকৃতভাবে রাষ্ট্রীয় প্রতিরক্ষা তথ্য নিজের কাছে আটকে রাখার এক কাউন্ট এবং তদন্তকাজে বাধা সৃষ্টি করার দুই কাউন্ট। সব মিলিয়ে এখন গোপন নথির মামলায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ৪০ কাউন্টের বিচার হবে।
নতুন অভিযোগ যুক্ত করার পাশাপাশি এই মামলায় ট্রাম্পের ফ্লোরিডার মার-অ্যা-লাগো এস্টেটের কর্মী কার্লোস ডি অলিভিয়েরাকেও আসামি করা হয়েছে। পাশাপাশি মামলার আরেক আসামি ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ওয়াল্ট নটার বিরুদ্ধেও বৃহস্পতিবার তদন্তকাজে বাধা দেয়ার নতুন দুটি অভিযোগ যুক্ত করা হয়েছে। ট্রাম্প ও নটা দুজনেই এই মামলায় নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, মার-অ্যা-লাগো এস্টেটের সিটিটিভি ফুটেজ মুছে ফেলার জন্য অলিভিয়েরাকে চাপ দিয়েছেন ট্রাম্প। অবৈধভাবে রাখা গোপন নথি সরিয়ে নেয়ার ঘটনা রেকর্ড হয়েছিল ওই সিসিটিভিতে।
তবে ট্রাম্প বরাবরের মতোই এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার দাবি, মামলা পরিচালনার জন্য যথেষ্ট তথ্য না পাওয়ায় স্পেশাল কাউন্সেল ‘উন্মাদ’ হয়ে গেছেন।
আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সামনের সাড়িতে থাকা ট্রাম্প নানা আইনি জটিলতায় জড়িয়ে আছেন। অ্যামেরিকার ইতিহাসে তিনিই প্রথম সাবেক প্রেসিডেন্ট, যাকে ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে।
সংশোধিত অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে , ট্রাম্পের বিরুদ্ধে গোপন নথির অব্যবস্থাপনার অভিযোগ খতিয়ে দেখতে জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট ওই বাড়ির বেজমেন্টের সিকিউরিটি ফুটেজ তলব করে। সেই নোটিশ পেয়ে নটা ও মার-অ্যা-লাগোর প্রপার্টি ম্যানেজার ডি অলিভিয়েরা ফুটেজ মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র করেছিলেন। ওই বাড়ির সার্ভারের দায়িত্বে থাকা কর্মীকে অলিভিয়েরা টেক্সট করে বলেছেন, সিসিটিভির ফুটেজের সার্ভারটি ‘বস’ মুছে ফেলতে চাইছেন।
অভিযোগপত্র অনুযায়ী, অলিভিয়েরা পরে একটি ছোট আইটি রুমে আইটি ডিরেক্টরের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি ওই কর্মীকে তাদের মধ্যে হওয়া কথোপকথনটি গোপন রাখতে বলেন। আইটি রুমে যাওয়ার জন্য এবং নটার সঙ্গে দেখা করার জন্য ডি অলিভিয়েরা মার-অ্যা-লাগোর ঝোপঝাড় এবং পাতা দিয়ে ঢাকা গোপন পথ ব্যবহার করেছেন।
এর আগে গত জুনে গোপন নথি জব্দের ঘটনায় সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ৩৭টি অভিযোগ এনেছিলেন ফেডারেল আইনজীবীরা।
সে অভিযোগপত্রে বলা হয়েছিল, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ২০২১ সালে ক্ষমতা ছাড়ার পর জাতীয় নিরাপত্তার তথ্য নিজের কাছে রেখে দেয়া সংক্রান্ত ৩১টি অভিযোগ, বিচারকে বাধাগ্রস্ত করার ষড়যন্ত্রের একটি, নথি বা রেকর্ড আটকে রাখার একটি, নথি বা রেকর্ড বেআইনিভাবে গোপন করার একটি, ফেডারেল তদন্তে নথি গোপন করার একটি, গোপন করার পরিকল্পনার একটি, এবং মিথ্যা বিবৃতি ও উপস্থাপনার একটিসহ মোট ৩৭টি অভিযোগ আনা হয়েছে।
মায়ামির ফেডারেল কোর্টে ক্ল্যাসিফায়েড নথি সংক্রান্ত এ মামলা লড়ছেন ট্রাম্প।