ইউক্রেইনকে গোপনে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে অ্যামেরিকা

টিবিএন ডেস্ক

এপ্রিল ২৪ ২০২৪, ২০:৫১

অ্যামেরিকান দূরপাল্লার এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে ইউক্রেইন। ছবি: রয়টার্স

অ্যামেরিকান দূরপাল্লার এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে ইউক্রেইন। ছবি: রয়টার্স

  • 0

ইউক্রেইন আক্রমণকারী রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ব্যবহারের জন্য সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেইনকে গোপনে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়েছে অ্যামেরিকা। সেই দূরপাল্লার এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র গত সপ্তাহে প্রথমবারের মতো ব্যবহার করেছে ইউক্রেইন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অ্যামেরিকান কর্মকর্তা বলেন, ইউক্রেইনের জন্য ৩০ কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা প্যাকেজের মধ্যে এসব ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, যা ১২ মার্চ অ্যামেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অনুমোদন করেছিলেন। তবে ঠিক কতগুলো ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানো হয়েছে তার সঠিক তথ্য জানাননি ওই কর্মকর্তা।

ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ১৭ এপ্রিল ভোরে ইউক্রেেইনের ফ্রন্ট লাইন থেকে প্রায় ১৬৫ কিলোমিটার দূরে ক্রিমিয়ার একটি রুশ বিমানঘাঁটিতে প্রথমবারের মতো ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, ৩০০ কিলোমিটার পর্যন্ত পাল্লার আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম (এটিএসিএমএস) পাঠানো হবে কিনা তা কয়েক মাস ধরে বাইডেন প্রশাসনের মধ্যে বিতর্কের বিষয় ছিল। এই বিতর্কের মধ্যেই গত সেপ্টেম্বরে মিড-রেঞ্জ এটিএসিএমএস ইউক্রেেইনে পাঠানো হয়।

আমেরিকান মজুদ থেকে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো হারিয়ে গেলে অ্যামেরিকার সামরিক প্রস্তুতির ক্ষতি হবে এমন আশঙ্কায় দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের বিরোধিতা করেছিল পেন্টাগন। এছাড়াও উদ্বেগ ছিল যে, রাশিয়ার অভ্যন্তরে লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাতে ইউক্রেইন তাদের ব্যবহার করতে পারে।

অ্যামেরিকান কর্মকর্তা বলেন, অ্যামেরিকার সরকারি ও বেসরকারি হুঁশিয়ারি থাকা সত্ত্বেও ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে ইউক্রেইনের বিরুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার সরবরাহকৃত দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়া। তাদের হামলা বন্ধ না করায় এসব দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেইনে সরবরাহ করা হয়।

ওই কর্মকর্তা বলেন, এসব দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেইনকে দিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের অন্যতম কারণ ছিল ইউক্রেিইনের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে রাশিয়ার লক্ষ্য। ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা রাশিয়াকে এসব বিষয়ে সতর্ক করেছিলাম। তারা কাউকে তোয়াক্কা না করে তাদের টার্গেট পুনর্নবীকরণ করেছে।’

বাইডেন ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে তার জাতীয় নিরাপত্তা দলের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং ইউক্রেইনে ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর জন্য তার উপদেষ্টাদের সর্বসম্মত সুপারিশ মেনে নিতে সম্মত হন। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেইক সালিভান, সেক্রেটারি অফ ডিফেন্স লয়েড অস্টিন, ইউএস সেক্রেটারি অফ স্টেইট অ্যান্টোনি ব্লিনকেন এবং জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান সি কিউ ব্রাউন এ আলোচনায় অংশ নেন।

সেই সময়ে চ্যালেঞ্জ ছিল ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য কীভাবে অর্থ প্রদান করা যায় তা নির্ধারণ করা। অ্যামেরিকা তার তহবিলের সমস্ত বিকল্প শেষ করে ফেলেছিল আর কংগ্রেসে আটকে থাকা বিল আরও সহায়তার পথে মূল বাধা সৃষ্টি করে। কিন্তু এরপরেই মার্চ মাসে একটি সুযোগ তৈরি হয়। পেন্টাগন তখণ বেশ কয়েকটি চুক্তি পাস হয়। সেই সময়টাকে কাজে লাগিয়ে ইউক্রেইনকে ৩০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা পাঠাতে সক্ষম হন বাইডেন।

ওই কর্মকর্তা বলেন, বাইডেন তার টিমকে এই তহবিল প্যাকেজে দূরপাল্লার এটিএসিএমএস অন্তর্ভুক্ত করতে বলেছিলেন। তবে দূরপাল্লার এটিএসিএমএস এসব ক্ষেপণাস্ত্র অপারেশনাল সুরক্ষা বজায় রাখতে বলা হয়। এবং ইউক্রেনকে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার ও এসব তথ্য গোপন করতে বলা হয়েছিল।


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন