মিযৌরিতে ২ জেল কর্মকর্তা হত্যায় কার্যকর হচ্ছে টিসিয়াসের মৃত্যুদণ্ড

টিবিএন ডেস্ক

জুন ৬ ২০২৩, ১৪:৪৫

৪২ বছর বয়সী মাইকেল টিসিয়াস। ছবি: এপি

৪২ বছর বয়সী মাইকেল টিসিয়াস। ছবি: এপি

  • 0

মিযৌরিতে এক বন্দিকে জেল থেকে পালাতে সহায়তা করতে দুই জেল কর্মকর্তা হত্যার দায়ে মাইকেল টিসিয়াস নামে ৪২ বছর বয়সী এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হচ্ছে মঙ্গলবার।

টিসিয়াস ২০০০ সালের ২২ জুন র‍্যানডলফ কাউন্টি জেলে লিওন এগলি ও জেসন অ্যাক্টন নামে দুই জেল কর্মকর্তাকে গুলি চালিয়ে হত্যা করেন। বন টেরের স্টেইট জেলে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইনজেকশনের মাধ্যমে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।

তবে টিসিয়াসের মৃত্যুদণ্ডের রায় সম্পর্কে কিছু বিচারক বলেছেন, মিযৌরির গভর্নর মাইক পারসন মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন করলে তারা আপত্তি করবেন না।

রিপাবলিকান গভর্নর পারসন সোমবার অবশ্য তা প্রত্যাখ্যান করে এক বিবৃতিতে বলেন, এক অপরাধীকে জেল থেকে পালাতে সহায়তা করতে দুই নিবেদিত সরকারি কর্মচারীকে হত্যা করেছেন টিসিয়াস। মিযৌরির আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর বহাল থাকবে।

টিসিয়াসের মৃত্যুদণ্ড থামাতে তার আইনজীবীরা ইউএস সুপ্রিম কোর্টকে অনুরোধ করেছেন। তাদের দাবি, সাজা শুনানিতে এক বিচারক মিযৌরি আইন লঙ্ঘন করেছেন।

‘টিসিয়াসকে রেহাই দেয়া উচিত কারণ হত্যার সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১৯’ ইতোমধ্যে এমন যুক্তিও খারিজ করেছে সুপ্রিম কোর্ট।

২০০৫ সালের একটি রায় অনুযায়ী, অপরাধের সময় কারও বয়স ১৮ বছরের কম থাকলে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে না। তবে টিসিয়াসের অ্যাটর্নিরা যুক্তি দিয়ে বলেন ১৯ বছর বয়সে অপরাধ ঘটানো টিসিয়াসের শাস্তি প্যারোল ছাড়াই যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে পরিবর্তন করা উচিত।

টিসিয়াস পক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, ছোটবেলা থেকেই টিসিয়াস অবহেলিত ছিলেন। কিশোর বয়সে ছিলেন গৃহহীন। ১৯৯৯ সালে ১৮ বছর বয়সে একটি ভাড়া করা স্টেরিও সিস্টেম প্যানিং করার অভিযোগে তাকে জেলে পাঠানো হয়েছিল।

প্রায় দুই যুগ আগে টিসিয়াসকে হান্টসভিলের একই কাউন্টি জেলে আরেক বন্দি রয় ভ্যান্সের সঙ্গে রাখা হয়েছিল। টিসিয়াসের মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। আদালতের রেকর্ড অনুযায়ী, টিসিয়াস ও ভ্যান্স দুজনে জেল থেকে পালানোর পরিকল্পনা করছিলেন। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী টিসিয়াস বের হয়ে ভ্যান্সকে পালাতে সাহায্য করবেন বলে কথা হয়েছিল।

জেল থেকে ছাড়া পেয়ে ২০০০ সালের ২২ জুন মধ্যরাতের ঠিক পরে, ভ্যান্সের গার্লফ্রেন্ড ট্রেসি বুলিংটনকে সঙ্গে নিয়ে জেলে যান টিসিয়াস। তারা এগলি ও অ্যাক্টন নামে ওই দুই কারারক্ষীকে ভ্যান্সের কাছে সিগারেট পৌঁছে দিতে বলেন। তবে সে সময় কারারক্ষীরা জানতেন না, টিসিয়াসের কাছে পিস্তল ছিল।

বিচারের সময় ভ্যান্সের গার্লফ্রেন্ড বুলিংটন সাক্ষ্য দেন, প্রথমে অ্যাক্টনকে গুলি করে হত্যা করেন টিসিয়াস। এরপর এগলি তার কাছে এলে তাকেও গুলি করেন। দুই কর্মকর্তা কারও কাছে অস্ত্র ছিল না।

এরপর ডিসপ্যাচ এলাকায় চাবি খুঁজে পেলে ভ্যান্সকে যে সেলে আটকিয়ে রাখা হয়েছিল সেটি খোলার চেষ্টা করেন টিসিয়াস। এগলি এমন সময় বুলিংটনের পা চেপে ধরলে টিসিয়াস তাকেও গুলি করেন।

টিসিয়াস ও বুলিংটন পালিয়ে গেলেও ক্যানসাসে তাদের গাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। এরপর তাদের ক্যানসাসের ওয়াথেনা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। 

দুই জেলকর্মী হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছেন বুলিংটন ও ভ্যান্স।


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন