দাবানলে ছারখার হাওয়াইয়ের লাহাইনা, ৫৫ মরদেহ উদ্ধার

টিবিএন ডেস্ক

আগস্ট ১১ ২০২৩, ১১:১২

দাবানলে পুড়ছে মাউই দ্বীপ। ছবি: সংগৃহীত

দাবানলে পুড়ছে মাউই দ্বীপ। ছবি: সংগৃহীত

  • 0

হাওয়াইয়ের মাউই দ্বীপ তিন দিন ধরে পুড়ছে দাবানলে। সমুদ্রতীরবর্তী শহর লাহাইনার ৮০ শতাংশই ছাই হয়েছে। সেখান থেকে তিন দিনে অন্তত ৫৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন শতাধিক বাসিন্দা।

গভর্নর জশ গ্রিন বলেছেন, হাওয়াই স্টেইটের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ এই দাবানল। স্টেইটের প্রধান পর্যটন স্পট মাউইয়ের লাহাইনা শহর থেকে হাজার হাজার মানুষকে ইতোমধ্যে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। শহরে জারি আছে জরুরি অবস্থা।

দ্বীপটির পশ্চিমাঞ্চলে ১১ হাজার মানুষ বিদ্যুৎহীন রয়েছেন।

দাবানল নিয়ন্ত্রণে লড়াই করছেন ফায়ারফাইটাররা, একইসঙ্গে চলছে উদ্ধারকাজ। তাদের সহায়তায় পাঠানো হয়েছে ফেডারেল সার্চ অ্যান্ড রেস্কিউ টিম।

তবে হারিকেন ডোরার কারণে দাবানল বিস্তৃত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে।

এই দাবানলকে বড় দুর্যোগ বলে আখ্যায়িত করে মাউইয়ে ফেডারেল সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

তিনি বৃহস্পতিবার বলেন, ‘হাওয়াইয়ের মানুষের জন্য আমাদের প্রার্থনা রইল… তবে কেবল প্রার্থনাই নয়, আমাদের কাছে যা কিছু সম্পদ আছে সব তাদের সহায়তায় সরবরাহ করা হবে। তারা তাদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হতে দেখেছে। অনেকে হারিয়েছে আপনজন। ধ্বংসজজ্ঞ এখনও থামেনি।’

ঘটনাস্থলে দিনরাত কাজ করা ফায়ারফাইটার ও উদ্ধারকর্মীদের জন্যেও পর্যাপ্ত সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া লাহাইনাকে পুরোপুরি সারিয়ে তুলতে কয়েক বছর সময় লেগে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্টেইট কর্মকর্তারা।

মাউই চেম্বার অফ কমার্সের প্রেসিডেন্ট পামেলা ট্রাম্প্যাপ বলেন, ‘আমাদের সুন্দর দ্বীপটি পাহাড় থেকে সমুদ্র পর্যন্ত আগুনে ধ্বংস হয়ে গেছে।’

মাউই দ্বীপে প্রতি বছর দুই মিলিয়নেরও বেশি পর্যটক সমাগম হয়। ঐতিহাসিক স্থাপনা, বাহারি রেস্তোরাঁ ও মনোরম সৈকত এখানকার মূল আকর্ষন। দাবানলের হাত থেকে এসব সৌন্দর্যের কতটুকু রক্ষা পেল তা এখনও কর্মকর্তারা বুঝতে পারছেন না।

তবে তারা বলছেন, বহু ব্যবসায়িক স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে, লাহানিয়ার আইকনিক ফ্রন্ট স্ট্রিট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মাউই কাউন্টি কাউন্সিলের প্রধান অ্যালিস লি বলেন, ‘ফ্রন্ট স্ট্রিটজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল আগুন। পর্যটকরা সেখানে যত দোকান বা রেস্তোরাঁ দেখেছিলেন, প্রায় সবই ছাই হয়ে মাটিতে মিশেছে… ব্যবসায়ীদের এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে অনেক লড়াই করতে হবে… আমরা ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করার চেষ্টা করছি, তবে তাতে সময় লাগবে।’

পরিবারের সাত সদস্যের সঙ্গে মাউই ঘুরতে গিয়েছিলেন জাপানের গাকু ফুজিতা। দাবানল ছড়িয়ে পড়লে তাদের হোটেল ছাড়তে হয়। পাসপোর্ট ছাড়াই কোনোরকমে বের হয়ে আসেন তারা।

পরিবার ও আরও অনেক পর্যটকের সঙ্গে তারা একটি আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন। স্থানীয় মানুষের সহায়তায় তারা বেশ আপ্লুত।

ফুজিতা বলেন, ‘স্থানীয়রা আমাদের জন্য নানা রকম সহায়তা পাঠাচ্ছেন, সত্যিই তাদের প্রশংসা করি… তারা আমাদের নিজ পরিবারের সদস্যের মতোই দেখছেন।’

গভর্নর জশ গ্রিন জানান, মাউইয়ের সব বাসিন্দাদের জায়গা দিতে আরও দুই হাজার রুম তাদের প্রয়োজন। স্থানীয়দের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের বাড়িতে বাড়তি জায়গা থাকলে, বাড়তি কাউকে আশ্রয় দেয়ার জায়গা থাকলে অনুগ্রহ করে সাহায্যে এগিয়ে আসুন।’


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন




Do you like cookies? 🍪 We use cookies to ensure you get the best experience on our website. Learn more...