প্রেসিডেন্টের সইয়ে ঋণসীমার বিল আইনে পরিণত

মেহরিন জাহান, টিবিএন ডেস্ক

জুন ৪ ২০২৩, ২০:২০

প্রেসিডেন্টের সইয়ে ঋণসীমার বিল আইনে পরিণত
  • 0

মেয়াদ শেষের দুই দিন বাকি থাকতে ঋণসীমা বাড়ানোর বিলে সই করলেন অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এর মধ্য দিয়ে আইনে পরিণত হলো দ্বিপক্ষীয় সমঝোতা চুক্তির বিলটি, ঋণখেলাপি হওয়া থেকে এ যাত্রায় বেঁচে গেল অ্যামেরিকা।

হোয়াইট হাউয থেকে শনিবার দুপুরে জানানো হয়েছে, ফিসক্যাল রেসপন্সিবিলিটি অ্যাক্ট নামের বিলে প্রেসিডেন্ট সই করেছেন। হোয়াইট হাউযের বিবৃতিতে এই বিল পাসে কংগ্রেস নেতাদের অংশগ্রহণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বাইডেন।

টুইটারে শনিবার দুপুরে পোস্ট দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি মাত্রই দ্বিপক্ষীয় বাজেট চুক্তিতে সই করে তা আইনে পরিণত করলাম। এটি এমন এক চুক্তি যা ঘাটতি দূর, সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত, স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসার চাহিদা পূরণ এবং প্রবীণদের প্রতি আমাদের চরম বাধ্যবাধকতা পূরণের পাশাপাশি প্রথমবারের মতো ঋণগ্রস্ত হওয়ার শংকাকে প্রতিরোধ করেছে। এখন আমরা বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতি গড়ে তোলার কাজ অব্যাহত রাখতে পারব।’

এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যায় হোয়াইট হাউযের ওভাল অফিস থেকে দেয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, বিপর্যয় এড়ানো গেছে। ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান দুই দলকেই ধন্যবাদ জানিয়ে বাইডেন বলেন, ‘দুইপক্ষই আস্থা রেখে কাজ করেছে, তাদের কথা রেখেছে।’

তিনি বলেন, ‘কোনো দলই এককভাবে যা চেয়েছিল তা পায়নি, কিন্তু অ্যামেরিকার জনগণের যা প্রয়োজন তা পেয়েছে। আমরা একটি অর্থনৈতিক সংকট ও অর্থনৈতিক পতন এড়াতে পেরেছি।’

কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট নেতা বাইডেন ও রিপাবলিকান নেতা হাউয স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থি নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ঋণসীমা বাড়ানোর ও রাষ্ট্রীয় ব্যয় সংকোচনের এই দ্বিপক্ষীয় চুক্তিতে পৌঁছান। এরপর হাউয ও সেনেট পার হয়ে বিলটি প্রেসিডেন্ট বাইডেনের টেবিলে যায়।

দেশের অর্থনৈতিক বিপর্যয় ঠেকাতে দুই দলের এভাবে সমঝোতায় পৌঁছানোর বিষয়টির প্রশংসা করেছেন বাইডেন।

তিনি শুক্রবার বলেন, 'আমি যখন প্রেসিডেন্ট হতে দাঁড়িয়েছিলাম, আমাকে বলা হয়েছিল যে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার দিন শেষ… ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানরা আর কখনও একজোট হয়ে কাজ করতে পারবে না। আমি তখন সেটা বিশ্বাস করিনি। কারণ অ্যামেরিকা কখনও এ ধরনের ভাবনার কাছে হারতে পারে না।

‘আমি জানি, দ্বিপক্ষীয় সমঝোতা সহজ বিষয় না। একজোট হওয়া আসলেই কঠিন। তবে আমাদের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। এই যে অ্যামেরিকার অর্থনীতি ধসে পড়ার উপক্রম হয়েছিল, বিশ্ব অর্থনীতি ঝুঁকিতে পড়েছিল, এমন সময়গুলোতে সমঝোতা ছাড়া আর কোনো উপায় তো ছিল না। আমাদের রাজনীতিতে যতই জটিলতা থাকুক না কেন, এমন সময়গুলোতে আমরা একে অন্যকে প্রতিপক্ষ হিসেবে নয়, অ্যামেরিকান সহচর হিসেবেই দেখব।’

৩১.৪ ট্রিলিয়ন ঋণে ছিল দেশটি। সেটি শোধের সময়সীমা আগে ছিল ১ জুন। তবে ঋণসীমা বাড়ানো নিয়ে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানরা সমঝোতায় পৌঁছাতে পারছিল না বলে পরিস্থিতি বিবেচনায় সময়সীমা চার দিন বাড়িয়ে দেন ট্রেযারি সেক্রেটারি জ্যানেট ইয়েলেন।

রাষ্ট্রীয় ব্যয় সংকোচনে ডেমোক্র্যাটরা রাজি না হওয়া পর্যন্ত ঋণসীমা বাড়ানো আলোচনায় বসতে নারাজ ছিলেন কংগ্রেসের রিপাবলিকানরা। এতে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় অচলাবস্থা তৈরি হয়। এরপর প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও হাউয স্পিকার ম্যাকার্থি গত ২৮ মে সমঝোতা চুক্তিতে একমত হন। সেটি ৯৯ পৃষ্ঠার বিল আকারে গত মঙ্গলবার হাউয কমিটিতে ৭-৬ ভোটে অনুমোদিত হয়ে পৌঁছায় হাউয ফ্লোরে। 

কট্টর ডানপন্থি রিপাবলিকানদের কঠোর বিরোধিতার পরও লাল শিবিরের ১৪৯ আইনপ্রণেতা এই ‘ফিসক্যাল রেস্পন্সিবিলিটি অ্যাক্টের’ পক্ষে বুধবার রাতে হাউয ফ্লোরে ভোট দিন। সঙ্গে যোগ হয় ১৬৫ ডেমোক্র্যাট ভোট। সব মিলিয়ে ৩১৪-১১৭ ভোটে হাউয থেকে সেনেটে যায় বিল। সেখানেও ৬৩-৩৬ ভোটে পাস হয় বিলটি।


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন




Do you like cookies? 🍪 We use cookies to ensure you get the best experience on our website. Learn more...