৫১ ছুরিকাঘাতে প্রেমিকাকে হত্যায় ৪৫ বছরের কারাদণ্ড

টিবিএন ডেস্ক

জুন ৭ ২০২৩, ১২:৩৭

মার্কাস গারভিন ও  ক্রিস্টি হল্ট । ছবি: সংগৃহীত

মার্কাস গারভিন ও ক্রিস্টি হল্ট । ছবি: সংগৃহীত

  • 0

ইন্ডিয়ানায় প্রেমিকের বেকারত্ব নিয়ে মশকরা করায় তরুণীকে ৫১ বার ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছেন ক্ষুব্ধ ব্যক্তি। এই খুনের দায়ে অভিযুক্ত মার্কাস গারভিনকে গত ৬ জুন ৪৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

আদালতের রেকর্ড অনুযায়ী, ৩৩ বছর বয়সী গারভিন তার প্রেমিকা ক্রিস্টি হল্টের সেলফোনে কিছু টেক্সট মেসেজ খুঁজে পান। এসব মেসেজ দেখে তিনি ধারণা করেন তার প্রেমিকা অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন। এরপর তিনি ২০২১ সালের জুলাইয়ের শেষ দিকে হল্টকে ছুরি দিয়ে হত্যার পর মরদেহ টুকরো টুকরো করার চেষ্টা করেন।

ইন্ডিয়ানাপোলিশের প্রসিকিউটরের তথ্য অনুযায়ী, গারভিন তার প্রেমিকা হল্টকে খুনের পর মরদেহ একটি মোটেলের কাছের জঙ্গলে গুম করতে চেয়েছিলেন। মোটেলের সিসিটিভিতে মরদেহটি টেনে নেয়ার ঘটনা দেখার পর তাকে গ্রেফতার করা হয়। 

তদন্তকারীরা বলছেন, ২০২১ সালের ৩০ জুলাই ইন্ডিয়ানাপোলিশের পুলিশ ডিপার্টমেন্ট ভোর ৫টার দিকে একটি ফোনকল পায়।  এতে জানানো হয়, সন্দেহভাজন এক ব্যক্তি মোটেল রুমে প্রবেশের আগে চাদর দিয়ে মোড়ানো ভারী কিছু মোটেলের পাশের জঙ্গলে টেনে নিয়ে গেছেন। এ সময় সন্দেহভাজন ব্যক্তিটি আশপাশে সতর্ক দৃষ্টি রাখছিলেন। 

মোটেলের এক কর্মী পুলিশকে জানান, গারভিন ও হল্ট ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে সেই মোটেলে অবস্থা করছিলেন।

মোটেলের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, গারভিন মোটেলের একটি রুম থেকে সাদা চাদর দিয়ে মোড়ানো বেশ ভারী কিছু একটা টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। এ সময় চাদরের ভেতর থেকে একটি হাত বের হয়ে যায়।

এরপর ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তদন্তকারীরা হল্টের পচন ধরা দেহটি মোটেলের পূর্ব দিকে একটি কম্ফোর্টারে প্যাঁচানো অবস্থায় খুঁজে পান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গারভিন মেয়েটিকে অনেক নিপীড়ন করতেন। তিনি তার গলা টিপে ধরতেন এবং এসব কারণে মেয়েটি তাকে ছেড়ে যেতে ভয় পেতেন। মোটেল কর্মীরা জানান, গারভিন নিয়মিত মেয়েটির গায়ে হাত তুলতেন। মেয়েটির শরীরে মারধরের চিহ্ন ছিল।

হল্টের মরদেহ উদ্ধারের পর সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কর্তৃপক্ষ গারভিনকে মোটেলের বাথরুমে খুঁজে পায়। সে সময় তিনি মোটেল ছাড়ার জন্য তৈরি হচ্ছিলেন। এরপর সেখান থেকে তাকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়। 

আদালতের নথিতে বলা হয়েছে, মোটেল রুমে মরদেহের পঁচা গন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। ফ্লোর ছিল রক্তমাখা, আর বাথটাবের পাশ থেকে দুটি ছুরি উদ্ধার করা হয়। 

গারভিন শুরুতে প্রেমিকাকে হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, ঝগড়ার পর হল্ট ২৩ জুলায় তাকে রেখে চলে যান। 

পরে জিজ্ঞাসাবাদে হল্টকে হত্যার কথা স্বীকার করেন গারভিন। তিনি তদন্তকারীদের জানান, হল্ট ঘুমিয়ে থাকার সময় তার সেলফোনে কিছু মেসেজ দেখতে পান। মেসেজিং করা ব্যক্তিটির সঙ্গে হল্টের সম্পর্ক হয়েছিল। হল্ট সেই ব্যক্তির সঙ্গে গারভিনের চাকরি না পাওয়া নিয়ে ঠাট্টাও করেন। 

এসব দেখে ক্ষুব্ধ গারভিন প্রেমিকাকে ডেকে তুলে ছোট ছুরির সাহায্যে তাকে হত্যা করেন। তিনি হল্টকে টুকরো টুকরো করে ফেলতে চেয়েছিলেন, তবে ব্যর্থ হয়ে মরদেহ জঙ্গলে ফেলে আসেন।

ময়নাতদন্তে জানা যায়, হল্টকে সব মিলিয়ে ৫১ বার ছুরিকাঘাত করা হয়। 


0 মন্তব্য

Do you like cookies? 🍪 We use cookies to ensure you get the best experience on our website. Learn more...