হুইসেলব্লোয়ার ড্যানিয়াল এলসবার্গের মৃত্যু

টিবিএন ডেস্ক

জুন ১৭ ২০২৩, ১১:০০

হুইসেলব্লোয়ার ড্যানিয়াল এলসবার্গ। ছবি: বিবিসি

হুইসেলব্লোয়ার ড্যানিয়াল এলসবার্গ। ছবি: বিবিসি

  • 0

ভিয়েতনাম যুদ্ধে অ্যামেরিকার জড়িত থাকার নথি প্রকাশকারী হুইসেলব্লোয়ার ড্যানিয়েল এলসবার্গ মারা গেছেন।

এলসবার্গের পরিবার জানিয়েছে, তিনি অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারে ভুগছিলেন। ক্যালিফোর্নিয়ার কেনসিংটনের নিজ বাড়িতে শুক্রবার ৯২ বছর বয়সে তিনি মারা যান।

সাবেক এই মিলিটারি অ্যানালিস্ট ১৯৭১ সালের পেন্টাগন পেপারস ফাঁস করায় ‘অ্যামেরিকার সবচেয়ে বিপদজনক ব্যক্তি’ হিসেবে পরিচিতি পান।

তিনি ১৯৫৫ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত চলা ভিয়েতনাম যুদ্ধে অ্যামেরিকার জড়িত থাকার গোপন নথি ফাঁস করেন। নিউ ইয়র্ক টাইমসে সেই খবর প্রকাশ করা থামাতে নিক্সন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের চেষ্টা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছিল।

এলসবার্গের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে লস অ্যাঞ্জেলেসের ফেডারেল আদালতে চুরি, গুপ্তচরবৃত্তি, ষড়যন্ত্রসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ আনা হয়েছিলো।

তবে তার বিরুদ্ধে আনা গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ শেষ পর্যন্ত খারিজ হয়ে যায়।

বেশ কয়েক দশক তিনি সরকারি ওভাররিচ ও সামরিক হস্তক্ষেপের কট্টর সমালোচক ছিলেন।

তিনি হোয়াইট হাউজে ১৯৬০ এর দশকে নিউক্লিয়ার স্ট্র্যাটেজিকের দায়িত্ব পালন করেন। সেসময় অ্যামেরিকার সামরিক বিভাগকে ভিয়েতনাম যুদ্ধ নিয়ে পরামর্শ দেয়ারও কাজ করেন। আর তখনই তিনি ভিনদেশি যুদ্ধে অ্যামেরিকার হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করেন।

এলসবার্গ ভেবেছিলেন নিজ দেশে রাজনৈতিক চাপ তৈরি করতে পারলে হয়তো ভিয়েতনামের যুদ্ধে অ্যামেরিকার হস্তক্ষেপ থামানো সম্ভব হবে। সেই চিন্তা থেকে তিনি সাত হাজার পৃষ্ঠার ‘পেন্টাগন পেপারস’ ফাঁস করে দেন।

সরকারের ওই গোপন নথিতে একাধিক অ্যামেরিকান প্রেসিডেন্টের প্রতারণার বিস্তারিত তথ্য ছিল।

ফাঁস হওয়া সেই নথির সঙ্গে ভিয়েতনাম যুদ্ধ নিয়ে অ্যামেরিকার জনগণের সামনে সরকারের বিবৃতির কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। বরং ওই নথি ফাঁসের ফলে ভুল ও মিথ্যা তথ্য প্রচারের জন্য সরকারবিরোধী আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটায়। শেষ পর্যন্ত অ্যামেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড এম নিক্সনের পতন ঘটে।

সংবাদমাধ্যম এনপিআর এলসবার্গের পরিবারের প্রকাশিত বিবৃতি তুলে ধরে বলেছে, ‘ড্যানিয়েল ছিলেন সত্য সন্ধানকারী দেশপ্রেমিক। তিনি সবসময় সত্য কথা বলেছেন। তিনি বরাবরই যুদ্ধের বিরোধিতা করেছেন। তবে এর বাইরে তিনি একজন প্রিয় স্বামী, বাবা, দাদা ও প্রপিতামহ। আবার অনেকের কাছে তিনি প্রিয় বন্ধু। তার অনুসারীদের জন্য তিনি ছিলেন অনুপ্রেরণীয় ব্যক্তি। আমরা সবাই তাকে খুব মিস করছি।’


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন