তত্ত্বাবধায়ক সরকার ‘ডেড ইস্যু’-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের জবাবে এই মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।

ঢাকা রিপোর্টার্স  ইউনিটিতে শনিবার বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা ও বিএনপির সাবেক এমপি এবং পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী গৌতম চক্রবর্তীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে বর্তমান সরকার চরম ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। যে কারণে আমরা বার বার করে বলছি, এই সরকারের এখন থাকার আর কোনো কারণ নেই। তারপরও তার নেতা-মন্ত্রীরা বলেন যে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নাকি এখন ডেড ইস্যু।

‘ডেড ইস্যু হবে কেনো? এটাই তো এখন সবচেয়ে লাইভ ইস্যু। কারণ আমরা মনে করি যে, এই সরকারের এই মুহূর্তে পদত্যাগ করা উচিত।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এত চুরি করেছে, এত দুর্নীতি করেছে এবং একটা সমস্যারও সমাধান করতে পারেনি সেই সরকারের ক্ষমতায় থাকার কারণ নেই। সেই কারণে আমরা বলেছি যে, একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার অথবা একটা নিরপেক্ষ সরকার এবং নির্দলীয় সরকারকে দায়িত্ব দিতে হবে।’

আওয়ামী লীগ সরকার ভোট দেয়ার ব্যবস্থা এবং নির্বাচনি ব্যবস্থাকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ) জানে যে, তারা এতো চুরি-চামারি করেছে যে, সাধারণভাবে যদি সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন হয় তাহলে কোনো দিনই তারা ক্ষমতায় ফিরে আসা দূরে থাকুক, পার্লামেন্টে ১০ ভাগেরও বেশি ভোট পাবে না।

‘আমরা খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষ দুইটা ইলেকশন দেখেছে। ২০১৪ সালে ও ২০১৮ সালে। আবার ওই জায়গায় ফেরত যাওয়ার প্রশ্নই উঠতে পারে না।

‘এছাড়া গত ১৮ সালে শেখ হাসিনা আমাদেরকে ডেকেছিলেন সংলাপের জন্য। আমরা গিয়েছিলাম এ জন্য যে, আমরা মনে করেছিলাম আলোচনার মাধ্যমে যদি একটা অবস্থা তৈরি হয় সেই অবস্থায় আমরা যদি একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারি তাহলে হয়ত-বা জনগণের সেই ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে পারব।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আইনমন্ত্রী পার্লামেন্টে কালকে বলেছেন যে, যখন নির্বাচন চলবে, নির্বাচন কমিশনের সেই ক্ষমতা থাকবে যে, তখন আর কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না বা কাউকে আটক করা যাবে না। এই কথা কে বিশ্বাস করবে?

‘আমরা কোনো কথা শুনতে চাই না। আগে পদত্যাগ করুন, তারপরে সংসদ বিলুপ্ত করে নির্বাচনকালীন একটা নির্দলীয় সরকার গঠন করবার জন্য সেই ব্যবস্থা নিন।’

তিনি বলেন, ‘আজকে দেখুন আমাদের কথার প্রতিধ্বনি করছে আন্তর্জাতিক পত্রিকাগুলো। সরকার বলছে, বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। আর আন্তর্জাতিক পত্রিকাগুলো বলছে যে, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন ঝুঁকিতে।

‘বাংলাদেশের সাফল্য গল্প টক হয়ে গেছে সাওয়ার। কথাটা আমার নয়, কথাটা ভারতের টেলিগ্রাফের অনলাইন ভাসর্নে পরাণ বালাকৃষ্ণা বলে একজন প্রতিবেদকের প্রতিবেদনে এসব এসেছে।

‘আরও এসেছে যে, বাংলাদেশের সরকার ইতোপূর্বে যে সমস্ত দাবি করেছে সেই দাবিগুলো যে কতটা ঠুনকো ছিল, ক্রাইসিসে যখন বাংলাদেশ পড়েছে তখন সেটা স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’