মাউই যাচ্ছেন বাইডেন, দাবানলে উদ্ধার ১০৬ মরদেহ
টিবিএন ডেস্ক
আগস্ট ১৬ ২০২৩, ১২:২১
- 0
অ্যামেরিকার হাওয়াইয়ের ঐতিহাসিক মাউই দ্বীপে দাবানলে ছারখার অঞ্চলে হতাহতদের খোঁজে চলছে উদ্ধার অভিযান। এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে পুড়তে থাকা দ্বীপে এ পর্যন্ত ১০৬টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বিপর্যস্ত দ্বীপে আগামী সোমবার সফরে যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মাউইয়ের বিখ্যাত বন্দর নগরী লাইহানা এই দাবানলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগুনের ভয়াবহতায় মাউইয়ের পর্যটন স্পট খ্যাত লাইহানার অন্তত ৮৫ শতাংশ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
হাওয়াইয়ের গভর্নর জোশ গ্রিন মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেন, ইতোমধ্যে দ্বীপে ফেডারেল ইমার্যেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির (এফইএমএ) ৪০০-এর বেশি কর্মী মোতায়ন করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে আছেন ন্যাশনাল গার্ডের ২৭৩ সেনা।
তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের প্রায় ২৭ শতাংশে উদ্ধার কাজ শেষ হয়েছে। এতে অংশ নিচ্ছে মরদেহ শনাক্তকারী ক্যাডভার প্রজাতির ২০টি কুকুর।
এদিকে প্রেসিডেন্ট বাইডেন মঙ্গলবার মাউইয়ের দাবানলে ক্ষতিগ্রস্তদের সব ধরনের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব তিনি ও ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন হাওয়াই সফরে যাবেন।
মিলওয়াকিতে পৌঁছে বাইডেন বলেন, ‘যতদিন প্রয়োজন আমরা মাউইতে থাকব। যত সময় লাগুক না কেন। আমি এটি আন্তরিকতার সঙ্গে বলছি।’
এখনও কেন মাউই দ্বীপে যাননি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, জিল বাইডেনের সঙ্গে হাওয়াই স্টেইটে শিগগিরই সফরের পরিকল্পনা করেছেন তিনি। তবে, সফরের কারণে দাবানল পরবর্তী উদ্ধার কাজ যাতে ব্যাহত না হয় সে কারণে তাদের যেতে দেরি হচ্ছে। তিনি কোনো কাজে বাধা দিতে চান না।
প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘একবার ভেবে দেখুন, তারা চাইলেই পুড়ে যাওয়া এলাকায় অনুসন্ধানের কাজ করতে পারছেন না। তারা জানেন না কোথায়, কোন অবস্থানে কার মৃতদেহ পড়ে আছে। একজন মা-বাবার অবস্থানে থেকে ভাবুন- আপনি জানেন না আপনার সন্তান কোথায় আছে। এটি সত্যিই খুব কঠিন।’
বাইডেন আরও বলেন, ‘আমার স্ত্রী জিল ও আমি যত দ্রুত সম্ভব হাওয়াই যেতে চাই। এ বিষয়ে আমি হাওয়াই গভর্নরের সঙ্গেও কথা বলেছি। আমি তাদের কাজে বাধা হতে চাই না।
‘আমি দুর্যোগপরবর্তী সময়ে অগণিত অঞ্চলে গিয়েছি। এটি পীড়াদায়ক। তবু আমি হাওয়াই যেতে চাই। আমি নিশ্চিত করতে চাই, ভুক্তভোগীরা তাদের প্রয়োজনীয় সবকিছু পেয়েছে।’
দাবানলে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ফেডারেল সরকারের ত্রাণ সহায়তার বিষয়ে বাইডেন প্রশাসন জানিয়েছে, ইতোমধ্যে এফইএমএ তাদের ৩০০ কর্মীসহ ৫০ হাজার খাবারের প্যাকেট পাঠিয়েছে। এছাড়া, ৭৫ হাজার লিটার খাবার পানি, পাঁচ হাজার বিছানা ও ১০ হাজার কম্বল স্টেইটে সরবরাহ করা হয়েছে।
গভর্নর গ্রিন জানান, বাসিন্দাদের জন্য অন্তত ৫০০টি হোটেল রুমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসব হোটেলে ইতোমধ্যে ৩৩১ জন অবস্থান করছেন। একই সঙ্গে স্টেইটের অক্ষত বাড়িঘরে আরও এক হাজার মানুষের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমাদের লক্ষ্য বাস্তচ্যুত বাসিন্দাদের জন্য থাকার ব্যবস্থা করা। স্থায়ীভাবে নিজেদের বাড়িঘরে ফিরে যেতে আমাদের বেশ সময় লাগবে। এই মুহূর্তে এটি অনিশ্চিত।’
এদিকে উদ্ধার মরদেহ শনাক্তে বেগ পেতে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের। স্টেইট প্রশাসন নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি দ্রুত কাছাকাছি ফ্যাসিলিটিতে ডিএনএ নমুনা জমা দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
ডিপার্টমেন্ট অফ হেলথ অ্যান্ড হিউম্যান সার্ভিসেসের (এইচএইচএস) অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জোনাথন গ্রিন জানিয়েছেন, মরদেহ শনাক্তে সহায়তার জন্য একটি ভিক্টিম আইডেন্টিফিকেশন টিমসহ ৭৪ কর্মীকে ওই অঞ্চলে পাঠানো হয়েছে।