আগস্ট ১৪ ২০২৩, ১১:৩৭
মেরিয়ন কাউন্টি পুলিশ ডিপার্টমেন্ট এবং মেরিয়ন কাউন্টি শেরিফ অফিসের আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তারা শুক্রবার অফিসের কম্পিউটার ফাইল সার্ভার, কম্পিউটার এবং ফোনসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে যান।
অলাভজনক সংবাদ সাইট কানসাস রিফ্লেক্টরের পোস্ট করা একটি পরোয়ানায় দেখা যায় তাতে মেরিয়ন কাউন্টির ডিস্ট্রিক্ট আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট লরা ভুয়া সই করেছেন। এতে তল্লাশির অনুমোদন দেয়ার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, পত্রিকাটি পরিচয় চুরি এবং কম্পিউটার সংক্রান্ত বেআইনি কাজ পরিচালনা করেছে।
সিটি কাউন্সিলের কাছে গত ৭ আগস্ট মেরিয়ন রেস্টুরেন্টের মালিক নিওয়েল অভিযোগ করেন, দ্য রেকর্ড অবৈধভাবে তার সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেছে।
ফেডারেল প্রাইভেসি প্রোটেকশন অ্যাক্টের মাধ্যমে সংবাদকর্মী ও নিউজরুমগুলো আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অনুসন্ধান থেকে সুরক্ষা পায়। আর তাই কাজটি করতে হলে পুলিশকে সাধারণত পরোয়ানা জারি করতে হয়।
দ্য রেকর্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘দ্য রেকর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করা আইন বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানকে অ্যামেরিকায় অপ্রত্যাশিত বলে অভিহিত করেছেন। এ ঘটনা তৃতীয় বিশ্বের মতো ঘটনাগুলোকে স্মরণ করিয়ে দেয়।’
মেরিয়নের পুলিশ প্রধান গিডিওন কোডি ইউএসএ টুডেকে এক ই-মেইল বার্তায় বলেন, ‘সাংবাদিক গোপনে অন্যায় কাজে অংশ নিচ্ছেন এমন সন্দেহের কারণ থাকলে প্রাইভেসি প্রোটেকশন অ্যাক্ট সার্চ ওয়ারেন্ট জারির অনুমতি দেয়।’
কোডি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি বাকি গল্প জনগণ যখন জানতে পারবে, তখন বিচার ব্যবস্থা নিয়ে তোলা প্রশ্ন পরিষ্কার হবে। আমি এখন পর্যন্ত স্টেইট ও স্থানীয় তদন্তকারীদের সব ধরনের সহযোগিতার প্রশংসা করছি।’
দ্য রেকর্ডের প্রকাশক এবং মালিক এরিক মেয়ার বলেছেন, ‘একটি সূত্র রেকর্ড এবং সিটি কাউন্সিলের একজন সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এতে এমন তথ্য পাওয়া গেছে যে নিওয়েলের বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই এবং তিনি বার বার ড্রাইভিং আইন লঙ্ঘন করেছেন।’
দ্য রেকর্ড একটি পাবলিক ওয়েবসাইট ব্যবহার করে তথ্যটি যাচাই করেছে, তবে এটি প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একজন আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শের পরে মেয়ার কোডি এবং শেরিফ জেফ সোয়েজকে সূত্রের সরবরাহ করা তথ্য সম্পর্কে জানিয়েছেন।
সিটি কাউন্সিলে নিওয়েল অবৈধভাবে সংবেদনশীল নথি সংগ্রহ এবং প্রকাশের অভিযোগ তোলার পর দ্য রেকর্ড বৃহস্পতিবার তার কর্মকাণ্ডের বিশদ বিবরণসহ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে দাবি করা হয় নিওয়েলের অভিযোগ মিথ্যা।
পুলিশ শুক্রবার সকালে দ্য অফিস এবং মেয়ারের বাড়িতে তল্লাশি চালায়। বাসায় মেয়ার এবং তার মা, সংবাদপত্রের সহ-প্রতিষ্ঠাতা জোয়ান মেয়ার থাকেন। পুলিশ দুটি কম্পিউটার এবং একটি অ্যালেক্সা স্মার্ট স্পিকার নিয়ে গেছে।
পুলিশ ভাইস মেয়র রুথ হারবেলের বাড়িতেও তল্লাশি চালিয়েছে। এই অনুসন্ধানের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ফেডারেল মামলা করা হবে বলে জানিয়েছে তারা।
মেয়ার শুক্রবারের প্রতিবেদনে বলেন, ‘আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার আগামী সপ্তাহে প্রকাশনায় ফেরত আসা। তবে আমরা এটিও নিশ্চিত করতে চাই, আজ আমরা যেমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে সেটি যেন অন্য কোনো সংবাদমাধ্যমের ক্ষেত্র না ঘটে।’
কানসাস প্রেস অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী পরিচালক এমিলি ব্র্যাডবারি ইউএসএ টুডেকে বলেন, অন্য স্থানীয় সংবাদপত্র দ্য রেকর্ডকে সহায়তা করছে যাতে এটি এই সপ্তাহে প্রকাশনায় ফিরে আসতে পারে। পাশাপাশি প্রেস অ্যাসোসিয়েশনগুলোও দ্য রেকর্ডকে সমর্থনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।’
ন্যাশনাল নিউজপেপার অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারপার্সন জন গ্যালার এক ফেইসবুক পোস্টে জব্দ করা সব সম্পত্তি ফেরত দিতে কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘একটি সংবাদপত্রের জন্য অঘোষিত অনুসন্ধান এবং সম্পত্তি জব্দ করার ঘটনা আধুনিক সময়ের অ্যামেরিকায় অকল্পনীয়। যে দিশটিতে ফার্স্ট অ্যামেন্ডমেন্ড এর অধিকারকে সম্মান করা হয়।’