বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দুই শীর্ষ সহযোগী অমিত শাহ ও যোগি আদিত্যনাথের সঙ্গে জড়িত ফেইক ভিডিও ক্লিপগুলোর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করা এবং জড়িত সন্দেহে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা অরুন রেড্ডিসহ বেশ কিছু কর্মীকে গ্রেফতারের কথা নিশ্চিত করেছে পুলিশ৷
মোদির প্রধান সহযোগী হিসেবে পরিচিত ভারতের ফেডারেল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে এক ভিডিওতে দেখানো হয়েছে, যেখানে তিনি বলছেন ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) সংখ্যালঘুদের জন্য কিছু সামাজিক সুবিধা বন্ধ করবে।
নির্বাচনের মধ্যে এটি একটি বিষয় সংবেদনশীল, কারণ ভারতে কয়েক মিলিয়ন সংখ্যালঘু ভোটার আছেন।
অমিত শাহ তার আসল এবং এডিট করা বক্তৃতা পাশাপাশি পোস্ট করে এক এক্স বার্তায় এর জবাব দিয়ে অভিযোগ করেছেন, কোন প্রমাণ ছাড়াই যে ভিডিওটি জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করার জন্য তৈরি করা হয়েছে তার পেছনে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস ছিল।
তিনি বলেন, ‘এই সমস্যা সমাধানের জন্য পুলিশকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’
পুলিশের বিবৃতি অনুসারে ফেইক ভিডিওটি প্রচার করার জন্য গত সপ্তাহে আসাম, গুজরাট, তেলেঙ্গানা এবং নয়াদিল্লি থেকে কংগ্রেসের সোশ্যাল মিডিয়া টিমের ছয় সদস্যসহ অন্তত নয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কংগ্রেসের পাঁচ কর্মীকে জামিনে মুক্তি দেয়া হলেও শুক্রবার নয়াদিল্লি পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিট ওই ভিডিওটি শেয়ার করার দায়ে কংগ্রেসের জাতীয় সোশ্যাল মিডিয়া সমন্বয়কারী অরুন রেড্ডিকে আটক করেছে।
রেড্ডিকে তিন দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
নয়াদিল্লি এমন একটি অঞ্চল যেখানে অমিত শাহের মন্ত্রণালয় সরাসরি পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করে।
রেড্ডির এ গ্রেফতার কংগ্রেস কর্মীদের প্রতিবাদের জন্ম দিয়েছে এবং বিশেষ ট্যাগ লাইন ব্যবহার করে তারা এক্সে পোস্ট করেছেন।
কংগ্রেসের আইনপ্রণেতা মানিকম ঠাকুর বলেছেন, গ্রেফতারটি কর্তৃত্ববাদী শাসনের অপব্যবহারের উদাহরণ।
কংগ্রেসের সোশ্যাল মিডিয়ার প্রধান সুপ্রিয়া শ্রীনাতের কাছে এ বিষয়ে মন্তব্য চেয়ে একটি ইমেল পাঠানো হলেও এখন পর্যন্ত তিনি এর প্রতিক্রিয়া জানাননি।
আরেকটি ফেইক ভিডিওতে দেখা গেছে, মোদির অন্যতম প্রধান সহযোগী ও উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগি আদিত্যনাথ ২০১৯ সালের জঙ্গি হামলায় নিহতদের পরিবারদের যথেষ্ট সহযোগিতা না করার জন্য মোদির সমালোচনা করেছেন।
ফ্যাক্ট চেকাররা বলেছেন, ভিডিওটি একটি আসল ক্লিপের বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। রাজ্য পুলিশ এটিকে ‘এআই জেনারেটেড ডিপ ফেইক’ ভিডিও বলে অভিহিত করেছে।
ইন্টারনেট অ্যাড্রেস ট্র্যাকিং করে রাজ্য পুলিশ ২ মে এক্সে ভিডিওটি শেয়ারের দায়ে শ্যাম গুপ্তা নামে একজনকে গ্রেফতার করে।
তিনি বর্তমানে ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতে আছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ অফিসার কুমার বলেন, ‘এই ব্যক্তি প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট লোক নন। তিনি প্রযুক্তিবিদ হলে তাকে দ্রুত গ্রেফতার করা সম্ভব হতো না।’
ভারতে ১৯ এপ্রিল থেকে সাত ধাপের পার্লামেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলছে এবং মঙ্গলবার তৃতীয় ধাপের ভোট অনুষ্ঠিত হবে।