ইযরায়েলে আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধ

টিবিএন ডেস্ক

মে ৫ ২০২৪, ১৮:৪৪

ইযরায়েলে আল জাজিরার অফিস। ছবি: সংগৃহীত

ইযরায়েলে আল জাজিরার অফিস। ছবি: সংগৃহীত

  • 0

ইযরায়েল সরকার দেশে আল জাজিরা টেলিভিশন নেটওয়ার্কের কার্যক্রম বন্ধ করার পদক্ষেপ নিয়েছে। একই সঙ্গে তারা চ্যানেলটিকে হামাসের মুখপাত্র হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

ইযরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, গাজায় যুদ্ধ চলাকালীন মন্ত্রিসভা এই বিষয়ে একমত হয়েছে।

রোববার জেরুজালেমের অ্যাম্বাসেডর হোটেলে কাতারের সম্প্রচার মাধ্যমটির কার্যালয়ে অভিযান চালায় পুলিশ।

ইযরায়েলের যোগাযোগমন্ত্রী শ্লোমো কারহি বলেছেন, অভিযানে টেলিভিশন নেটওয়ার্কটির সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়া এক্স-এ মন্ত্রীর পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মন্ত্রণালয়ের পুলিশ কর্মকর্তা ও পরিদর্শকরা একটি হোটেল কক্ষে প্রবেশ করছেন।

বিবিসির একটি দল ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশ তাদের হোটেলে ঢুকে ভিডিও ধারণ করতে বাধা দেয়।

ইযরায়েলি স্যাটেলাইট সার্ভিস ইয়েস একটি বার্তা প্রদর্শন করেছে যাতে লেখা ছিল, ‘সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে, ইযরায়েলে আল জাজিরা স্টেশনের সম্প্রচার বন্ধ করা হয়েছে।’

এ দিকে ইযরায়েলি নিরাপত্তার জন্য হুমকি এমন দাবিকে ‘বিপজ্জনক ও হাস্যকর মিথ্যা’ বলে অভিহিত করেছে আল জাজিরা।

চ্যানেলটি ‘প্রতিটি আইনি পদক্ষেপ অনুসরণ করার’ অধিকার সংরক্ষণ করে বলে জানিয়েছে।

ইযরায়েল সরকার কার্যকরভাবে কেবল আংশিকভাবে চ্যানেলটি বন্ধ করতে পেরেছে। চ্যানেলটি এখনও ইযরায়েলে ফেসবুকের মাধ্যমে দেখা যায়।

ফরেন প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (এফপিএ) ইযরায়েলি সরকারকে তার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, দেশে আল জাজিরা বন্ধ করে দেয়া ‘মুক্ত গণমাধ্যমের সকল সমর্থকদের জন্য উদ্বেগের কারণ’।

এফপিএ এক বিবৃতিতে বলেছে, ইযরায়েল এখন ‘স্টেশনটি নিষিদ্ধ করার জন্য কর্তৃত্ববাদী সরকারগুলোর মতো একটি সন্দেহজনক ক্লাবে যোগ দিয়েছে।’

এফপিএ একই সঙ্গে সতর্ক করে দিয়েছে যে, ‘রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কাজ করছে’ বলে মনে করা হলে অন্যান্য বিদেশি আউটলেটগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করার ক্ষমতা রয়েছে নেতানিয়াহুর।

গত মাসে ইযরায়েলি সংসদ একটি আইন পাস করে, যাতে সরকারকে হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সময় জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে বিবেচিত বিদেশী সম্প্রচারকদের সাময়িকভাবে বন্ধ করার ক্ষমতা দেয়া হয়।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য ইযরায়েলি সরকারকে আহ্বান জানিয়ে এক্স-এ পোস্ট করেছে। তারা বলেছে, ‘স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য একটি মুক্ত ও স্বাধীন মিডিয়া অপরিহার্য। এখন গাজা থেকে রিপোর্ট করার ক্ষেত্রেও কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।’

গাজায় বিদেশি সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং আল জাজিরার কর্মীরা সেখানে একমাত্র সাংবাদিক ছিলেন।

বছরের পর বছর ধরে ইযরায়েলি কর্মকর্তারা এই নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে ইযরায়েলবিরোধী পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করে আসছেন।

৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইযরায়েলে হামাসের হামলার পর থেকে আল জাজিরার প্রতি তাদের সমালোচনা আরও তীব্র হয়েছে। এই হামলায় প্রায় ১,২০০ জন নিহত এবং ২৫০ জনেরও বেশি জিম্মি হয়েছিল।

হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইযরায়েলের সামরিক অভিযানে কমপক্ষে ৩৪ হাজার ৬৮৩ জন প্যালেস্টেনিয়ান নিহত এবং ৭৮ হাজার ১৮ জন আহত হয়েছে।


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন